রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ফের একবার ইউক্রেন যুদ্ধের সাময়িক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার ঘোষিত ৭২ ঘণ্টার এ যুদ্ধবিরতি ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে— এটি কি সত্যিকারের শান্তির আহ্বান, না কেবল কৌশলী রাজনৈতিক চাল?
এর আগে ২০ এপ্রিল ইস্টার সানডে উপলক্ষে পুতিন ৩০ ঘণ্টার একটি যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। তবে সে সময়ই অভিযোগ ওঠে, রাশিয়াই সেই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। এবারের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আরও গভীর সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, “রাশিয়া পূর্বশর্ত ছাড়া শান্তি আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। আমরা আশা করি ইউক্রেনও এই মানবিক পদক্ষেপে সাড়া দেবে।”
কিন্তু ইউক্রেনের পক্ষ থেকে ভিন্ন সুর। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা পাল্টা প্রশ্ন করেন, “রাশিয়া যদি সত্যিই শান্তি চায়, তাহলে ৮ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা কেন? এখনই কেন গোলাগুলি বন্ধ করছে না?” তিনি অন্তত ৩০ দিনের একটি পূর্ণ যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান।
বিশ্লেষণ বলছে, যুদ্ধবিরতি নয়, বার্তা দেওয়ার চেষ্টা!
বিবিসি ও এএফপির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, এই ক্ষণস্থায়ী যুদ্ধবিরতিকে অনেকে একটি কূটনৈতিক প্রচারণা হিসেবে দেখছেন। পুতিন সম্ভবত আন্তর্জাতিক মহলে— বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে— একটি বার্তা দিতে চাচ্ছেন যে, রাশিয়া যুদ্ধ নয়, শান্তি চায়। কিন্তু ইউরোপীয় সমালোচকরা বলছেন, এটি নিছক ‘পিআর কৌশল’। ইস্টার যুদ্ধবিরতির সময় রাশিয়াই গোলাবর্ষণ চালিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ঘোষণার মাঝেই রক্তপাত
তবে বাস্তবতা আরও ভয়াবহ। যুদ্ধবিরতির ঘোষণার ঠিক পরেই মঙ্গলবার স্থানীয় সময় ভোরে রাশিয়া ও ইউক্রেন একে অপরের দিকে ড্রোন হামলা চালায়। এতে ইউক্রেনে ১২ বছর বয়সী এক কিশোরী নিহত হয় এবং রাশিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে আরও দুজন মারা যান।
শান্তির মুখোশে আড়াল নয় তো আরও সহিংসতা?
পুতিনের এই ঘোষণাকে ঘিরে বিশ্বজুড়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। এটি কি সত্যিকারের মানবিক উদ্যোগ, না কি যুদ্ধের মাঝেই চতুর বিরতির সুযোগ নিয়ে অবস্থান মজবুত করার পরিকল্পনা?
বর্তমানে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে সরাসরি শান্তি আলোচনা নেই। এর মধ্যে এমন প্রতীকী যুদ্ধবিরতি শুধু আন্তর্জাতিক চাপ এড়ানোর একটি চেষ্টা— এমন মন্তব্য করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।