বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে দু-একটি ফেরি চললেও ঘাটে দীর্ঘসময় আটকে আছে অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি যানবাহন। ঘাটে যাত্রীর সঙ্গে যানবাহনের দীর্ঘ সারি। এদিকে মাছ, তরমুজসহ কাঁচামালে পচন ধরায় বাংলাবাজার ঘাটে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিসি) লোকজন ও পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে।
সরেজমিন ঘাট ঘুরে দেখা যায়, কোনো বিধিনিষেধই মানতে চাইছেন না দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বাংলাবাজার ঘাট থেকে দুটি ফেরি অ্যাম্বলেন্সসহ জরুরি যানবাহন নিয়ে পার হয়। তবে যাত্রীদের চাপে জরুরি যানবাহন তোলা পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিসিকে বেগ পেতে হয়।
সকাল থেকেই উভয় পাড়ে যাত্রী ও যানবাহনের প্রচণ্ড ভিড় শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে যাত্রী ও যানবাহনে সয়লাব হয়ে যায় ঘাট এলাকা।
ফেরির জন্য অপেক্ষা করছেন যাত্রী ও যানবাহনগুলো। দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে রোগী নিয়ে বাংলাবাজার ঘাটে এসে অ্যাম্বুলেন্সকেও দেখা গেছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে। জরুরি সার্ভিস পারাপারে বিলম্ব হওয়ায় সাধারণ যাত্রীদের পাশাপাশি রোগীরাও চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
ট্রাকচালক হায়দার আলী বলেন, ‘প্রায় চারদিন ধরে তরমুজ নিয়ে ঘাটে বসে আছি। পকেটে খাবার টাকা নেই। রাতে কাঁচামাল পার করার কথা কিন্তু পার হতে পারছি না। সারারাতই ট্রাকগুলো একপাশে রেখে প্রাইভেটকার ও যাত্রী পার করছে ফেরি কর্তৃপক্ষ। পুলিশও আমাদের সিরিয়াল দিচ্ছে না।
খুলনা থেকে বাংলাবাজার ঘাটে আসা যাত্রী আয়শা বেগম জানান, তার এক নিকটাত্মীয় হাসপাতালে ভর্তি। জরুরি কারণে ঢাকা যাবেন। ভোররাতে সাহরি খেয়ে রওনা দিয়েছেন। প্রায় দেড় হাজার টাকা খরচ করে বাংলাবাজার ঘাটে পৌঁছান। এসে দেখেন ঘাটে ফেরি বন্ধ। কখন ওপাড়ে যেতে পারবেন, সেই অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন তিনি।
অ্যাম্বুলেন্সচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মুমূর্ষু রোগী নিয়ে বরিশাল থেকে সকাল ৭টায় বাংলাবাজার ঘাটে পৌঁছেছি। গাড়ির মধ্যে রোগীর অবস্থা খুবই খারাপ। রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ফেরি ছাড়ার কথা বললেও সময়মতো ছাড়ছে না। দু-একটি ফেরি এলেও যাত্রীদের চাপে অ্যাম্বুলেন্স উঠানো যাচ্ছে না। ঢাকায় কখন পৌঁছাতে পারব তা জানি না।’
বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাটের ম্যানেজার মো. সালাউদ্দিন জানান, লকডাউনের জন্য এ রুটের ফেরি চলাচল বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। তবে লাশ, রোগীবাহী আম্বুলেন্স, জরুরি সেবামূলক ও পণ্যবাহী পরিবহন পারাপারে ফেরি চলাচল করবে।