করোনাকালীন যাত্রী কমায় বেতন কাটার প্রতিবাদে চুক্তির বাইরে ফ্লাইট পরিচালনা থেকে বিরত থাকা ক্ষুব্ধ পাইলটরা কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে চলমান আন্দোলন স্থগিত করেছেন।

মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালকদের সঙ্গে ফলপ্রসূ বৈঠক শেষে তারা এ সিদ্ধান্ত নেন।

এর আগে গতকাল সোমবার (২৫ অক্টোবর) থেকে বেতন কাটার প্রতিবাদে চুক্তির বাইরে ফ্লাইট পরিচালনা থেকে সরে দাঁড়ান পাইলটরা।

বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সভাপতি মাহবুবুর রহমান এ বিষয়ে আলাপকালে জাগো নিউজকে জানান, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিটিং ভালো হয়েছে, বলতে পারেন আমরা ফলপ্রসূ মিটিং করেছি। তারা জেন্টেলমেন এগ্রিমেন্ট ও কমিটমেন্ট করেছেন। বলেছেন, আগামী শনিবার বোর্ড মিটিং রয়েছে। বিষয়টি বোর্ড মিটিংয়ে তোলা হবে এবং বিদ্যমান সমস্যার সমাধান হবে।

বোর্ড মিটিংয়ে পাইলটদের যুক্তিসঙ্গত দাবিগুলো মূল্যায়ন করে বেতন সমন্বয়ের যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এদিকে সোমবার থেকে পাইলটরা চুক্তির বাইরে ফ্লাইট পরিচালনায় বিরত থাকায় একাধিক ফ্লাইট ছাড়তে বিলম্ব হয়েছে বলে বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে।

করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালে আকাশপথ যোগাযোগ প্রায় বন্ধ হওয়ায় যাত্রীসংখ্যাও নামে প্রায় শূন্যের কোঠায়। এতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্মীদের বেতন কমিয়ে দেয়। গত বছরের মে মাস থেকে পাইলটদের বেতন ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কাটা হচ্ছে। এখনো বিমান চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক না হলেও গত জুলাই মাসে বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন কাটার আগের সিদ্ধান্তে নানা পরিবর্তন আসে। এ সমন্বয়েও বিমান কর্তৃপক্ষ আগের বেতনে ফেরত আসেনি বলে অভিযোগ পাইলটদের।

বিমান কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে বাপার নির্বাহী পরিষদ গত জুলাইয়ে সভায় বসেছিল। সেই সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে পাইলটদের বেতন অন্যান্য কর্মকর্তা/কর্মচারীর মতো সমন্বয় করা না হলে তারা আন্দোলনে নামবে।

পরবর্তীতে বিমান কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে পাইলটরা কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে। তবে আশ্বাসের বাস্তবায়ন না হওয়ায় চুক্তির বাইরে কাজ বন্ধ করে দেন পাইলটরা।

জাতীয় পতাকাবাহী সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে বর্তমানে ১৫৭ জন পাইলট কাজ করছেন।

পাইলটরা জানান, বিমান ও বাপার মধ্যে সম্পাদিত দ্বিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী পাইলটদের মাসে ৭৫ ঘণ্টা ফ্লাই করা এবং মাসে ৮ দিন ছুটি পাওয়ার কথা রয়েছে।