আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ শুরু হচ্ছে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে। এই টুর্নামেন্টের জন্য অনেক আগেই প্রস্তুতি শুরু করে আয়োজক দেশ। এরপর প্রতিটি ম্যাচের ভেন্যুতে আইসিসির প্রতিনিধি দলও পরিদর্শন করে একাধিকবার। এবারও তেমনটাই হয়েছে, তবে এখনও প্রস্তুত নয় ভারতের একটি স্টেডিয়াম! মূলত হায়দরাবাদের রাজিব গান্ধী স্টেডিয়ামের বিপক্ষে এবার এমন অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল (মঙ্গলবার) হায়দরাবাদে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়া। টিকিট কেটে সেই ম্যাচ দেখতে স্টেডিয়ামে ঢোকা দর্শকদের অভিজ্ঞতা মোটেও সুখকর নয়। কেননা গ্যালারির একাংশের বাকেট চেয়ার ছিল বসার আযোগ্য। এরপর তার কিছু ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এরপর ক্রিকেটভক্তরা আয়োজক দেশ ভারত ও বিসিসিআইয়ের কড়া সমালোচনায় মাতেন।
জানা গেছে, বিশ্বকাপের আগে প্রতিটি ম্যাচ ভেন্যুতে আইসিসির প্রতিনিধি দল একাধিকবার পরিদর্শন করেছে। প্রতিটি স্টেডিয়ামের অবকাঠামো, সুবিধা ও স্বাচ্ছন্দ্য সরেজমিনে খতিয়ে দেখেছেন বিসিসিআইয়ের প্রতিনিধিরাও। মাঠ, গ্যালারি, ড্রেসিংরুম থেকে শুরু করে মিডিয়া সেন্টার, জিম, কমেন্ট্রি-বক্স পর্যন্ত সর্বত্রই যাতে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগে- সেদিকে দৃষ্টি দেওয়ার কথা আয়োজকদের। তবে এমন বজ্র আঁটুনির মধ্যেও যে ফসকা গেরো থেকেই গেছে, তার প্রমাণ হায়দরাবাদের এই স্টেডিয়াম।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমস বলছে, ভারতের একাধিক স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ম্যাচের সময় ছাদ থেকে জল চুঁইয়ে পড়ার ছবি দেখা গিয়েছিল অতীতে। তবে বিশ্বকাপের আগে তেমন কিছু দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। কেননা আইসিসি ইভেন্ট আয়োজনের আগে সব স্টেডিয়ামকেই তাদের অবকাঠামো ঢেলে সাজাতে হয়। মেরামত করতে হয় যাবতীয় ফাঁক-ফোকর। তবে হায়দারবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামের ওপর-নিচ যে নিখুঁত নয়, সেটা বোঝা গেল আরও একবার।
এমন অবস্থার জন্য স্থানীয় সংস্থাকেই দায়ী করেছে সংবাদমাধ্যমটি, ভাঙাচোরা চেয়ার বদলে দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি হায়দরাবাদ ক্রিকেট সংস্থা। তার ওপর চেয়ারগুলো পরিষ্কারও করে দেওয়া হয়নি। চূড়ান্ত অপরিচ্ছন্ন সেসব চেয়ারে পাখির মল দেখে বোঝা যায় যে, দীর্ঘদিন সেখানে চালানো হয়নি পরিচ্ছন্নতা অভিযান। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচ হলেও টিকিটের মূল্য নিতান্ত কম নয়। পকেটের পয়সা খরচ করে খেলা দেখতে আসা ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রাথমিক সুবিধাটুকুও না দিতে পারলে আয়োজকদের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।
এদিকে, অবকাঠামো আধুনিক নয় বলে মোহালির মতো ঐতিহ্যশালী স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের ম্যাচ দেয়নি বিসিসিআই। কিন্তু ঠিক তেমনটাই ঘটল হায়দরাবাদে। এই ভেন্যুতে এবারের বিশ্বকাপের তিনটি ম্যাচ রয়েছে। সবমিলিয়ে বিশ্বকাপের ৪৮টি ম্যাচ হবে ১০টি ভেন্যুতে। আগামীকাল (৫ অক্টোবর) ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ দিয়ে ত্রয়োদশ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর্দা উঠবে।