ভারতে ফের বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। দেশটিতে গত ১৮ দিনে ১০ বার বেড়েছে পেট্রলের দাম। ফলে জ্বালানিটির দাম ১শ’র গণ্ডি পার করেছে সাতটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে। তবে চার মেট্রো শহরের মধ্যে কলকাতাতেই মূল্য সর্বনিম্ন। বৃহস্পতিবারের হিসাবে কলকাতায় প্রতি লিটার পেট্রল ও ডিজেলের দাম যথাক্রমে ৯৬ দশমিক ৮৪ ও ৯০ দশমিক ৫৪ রুপি।
আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম কমার পরেও ভারতের বাজারে দামের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। গত ৪ মে থেকে দেশটিতে জ্বালানির দাম বেড়েছে ২৬ বার। পেট্রলের দাম লিটারে ১শ রুপি ছুঁয়েছে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, কর্নাটক ও লাদাখে। রাজস্থানের গঙ্গানগর জেলায় পেট্রলের দাম পড়ে লিটারে ১০৮ রুপির বেশি। ডিজেলের দামও ১শ পার করে দাঁড়িয়েছে ১শ দশমিক ৮২ রুটি।
চার মেট্রো শহরের মধ্যে দিল্লিতে পেট্রল ও ডিজেলের দাম লিটারে যথাক্রমে ৯৬ দশমিক ৮৩ ও ৮৭ দশমিক ৬৯ রুপি। মুম্বাইয়ে পেট্রলের দাম ১০৩.০৮ রুপি এবং ডিজেলের দাম ৯৫.১৪ রুপি। চেন্নাইয়ে পেট্রল ও ডিজেলের দাম যথাক্রমে ৯৮ দশমিক ১৪ ও ৯২ দশমিক ৩১ রুপি।
প্রসঙ্গত, ভারতে পেট্রল-ডিজেলের দাম চার ধাপে নির্ধারণ করা হয়। প্রথমত: শোধনাগার, এখানে পেট্রল, ডিজেল ও অন্যান্য পেট্রলজাত অপরিশোধিত তেল কেনা হয়। দ্বিতীয়ত: তেল সংস্থা, তারা তাদের লাভ রেখে এবং পেট্রল পাম্পে তেল সরবরাহ করে। তৃতীয়ত: এখানে পেট্রল পাম্প মালিকরা তাদের নির্দিষ্ট কমিশন পেয়ে থাকেন। চতুর্থত: কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের চাপানো আবগারি শুল্ক এবং ভ্যাট প্রদানের মাধ্যমে সাধারণ জনগণ সেই তেল কেনেন।
সম্প্রতি কয়েক মাস ধরে ভারতে অপরিশোধিত তেলের পাশাপাশি উৎপাদন ব্যয় বেড়েই চলছে। এর ফলাফল হিসেবে দেখা দিয়েছে ব্যাপক মূল্যস্ফীতি। খুচরা বিক্রয়মূল্য সূচকের (ডব্লিউপিআই) ভিত্তিতে গত মে মাসে ভারতে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৯৪ শতাংশ, যা দেশটিতে এযাবৎকালের সর্বোচ্চ রেকর্ড।
এছাড়া এটি টানা পঞ্চম মাস ডব্লিউপিআই সূচকে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির রেকর্ড ভাঙল ভারত। এর আগে গত এপ্রিলে দেশটিতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ, যা গত ১১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। মে মাসে সেই রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেল বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ভারত।