সোমবার ক্লাবের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন বার্সেলোনা সভাপতি হুয়ান লাপোর্তা। পুরো সংবাদসম্মেলন জুড়েই ছিল ক্লাবের আর্থিক অবস্থার বিভিন্ন দিক। তবে, এরই ফাঁকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেসিকে নিয়ে কথা বলতেই হলো লাপোর্তার। লিওনেল মেসি বার্সেলোনা ছেড়ে যাওয়ার এই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে নিয়ে কথা বললেন বার্সা সভাপতি।
শুরুতেই লাপোর্তা জানিয়ে দিলেন, মেসি এখন তাদের কাছে অতীত। ভবিষ্যতের দিকে তাকানোই হচ্ছে এখন বার্সার মূল কাজ। ইতিহাসের একটি পাতা যেহেতু উল্টে গেছে, সেহেতু সেদিকে না তাকিয়ে সামনেই তাকাতে চান তারা।
বার্সেলোনায় মেসি যুগে সমাপ্তি
মেসির চলে যাওয়া নিয়ে হুয়ান লাপোর্তা বলেন, ‘আমি মনে করি এ সম্পর্কটা ছিল (মেসি এবং বার্সার মধ্যে) খুবই সাফল্যমণ্ডিত। এটা ছিল এমন এক সম্পর্ক, যা বেশ কয়েকবছর স্থায়ী হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত এই সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।’
পিএসজিতে মেসির প্রেজেন্টেশন স্টাইলটা মোটেও মেনে নিতে পারেনি বার্সা। যেটা অকপটে স্বীকার করলেন বার্সা সভাপতি। তিনি বলেন, ‘তার প্রেজেন্টেশনটা আমাদের কাছে খুবই অদ্ভূত লাগলো। বার্সেলোনা সমর্থকদের মত আমিও চেয়েছিলাম, সে বার্সায় থাকুক। তবে, শেষ পর্যন্ত আমরা একটি সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছি। কারণ, সব কিছুর ওপরে ক্লাব বার্সেলোনা।’
মেসির ভবিষ্যৎ ভালো কামনা করে লাপোর্তা বলেন, ‘আমি তার সর্বোচ্চ ভালো কামনা করি। আমি তাকে সুখি দেখতে চাই। কারণ, এমনটা সে দাবি করে। তবে, এখন সম্ভবত আমরা একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। আমরা এখন তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বীর মতই আচরণ করবো।’
মেসির সঙ্গে শেষটা কী ভালো ছিল?
লাপোর্তা বলেন, ‘আমি দেখেছি, মেসির পক্ষ থেকে বেশ কিছু বক্তব্য এসেছে। মূলতঃ আমরা যা এরই মধ্যে ব্যাখ্যা করেছি, তার বক্তব্যটা তেমনই। আমাদের দুই পক্ষের বক্তব্যই ছিল একই রকম।’
মেসিকে রাখার জন্য যে চেষ্টা ছিল সে সময়কার বর্ণনা দিয়ে লাপোর্তা বলেন, ‘আমরা চাইলে হয়তো চুক্তিটা করে ফেলতে পারতাম। কিন্তু আমরা আগের বোর্ডের কাছ থেকে ক্লাবের অর্থনৈতিক অবস্থার সংখ্যাটা জানতে পেরেছিলাম কেবল। লা লিগার কাছে আমরা শুধুমাত্র ক্লাবের ৮৯ মিলিয়ন ইউরো লস দেখিয়ে রিপোর্ট দিয়েছিলাম। যেটা আমাদেরকে নিজেদের পছন্দমত যে কোনো কিছু করার সুযোগ দিয়েছিল।’
‘যখন আমরা দেখলাম, লা লিগা আমাদেরকে চাহিদামত এগিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিল, তখন আমরা আশাবাদী হয়ে গেলাম (মেসিকে চুক্তি করানোর ব্যাপারে)। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমারা যে পরিস্থিতির সামনে দাঁড়িয়ে গেলাম, তাতে বুঝতে পারলাম, আসলে এখন আর কোনোভাবেই মেসিকে ধরে রাখা সম্ভব নয়। এ কারণেই মূলতঃ আমরা মেসির সঙ্গে হ্যান্ডশেক করে নিয়েছি।’
‘লিও অবশ্য আরো সময় নিতে চেয়েছিল। কিন্তু আমরা বুঝলাম, এটা আর কখনোই সম্ভব নয়। মেসি নিজেকে বার্সায় ধরে রাখার জন্য অনেক ছাড় দিয়েছিল। অনেকভাবে চেষ্টা করেছিল নিজেকে ফিট করে নেয়ার। নিজের পারিশ্রমিকও কমিয়ে নিয়েছিল অনেক। কিন্তু যখন দেখলাম যে আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয়, তখন তাকে বিদায় বলে দেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।’