যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলীয় রাজ্য ফ্লোরিডা ও জর্জিয়ায় হারিকেন হেলেনের তাণ্ডবে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৩ জন হয়েছে। শক্তিশালী এ ঝড়ে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ।
বন্যার পানিতে আটকে পড়াদের উদ্ধারে নৌকা, হেলিকপ্টার ও বড় যানবাহন ব্যবহার করছেন কর্মকর্তারা। ফ্লোরিডার বিগ বেন্ড এলাকায় এর আগে এতো শক্তিশালী ঝড়ের আঘাত হানার ইতিহাস নেই।বীমা কোম্পানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ শত শত কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।বিবিসি লিখেছে, হেলেন দুর্বল হয়ে পড়লেও ঝড়ো হওয়া, বন্যা ও টর্নেডোর আশঙ্কা কাটেনি।যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি (এফইএমএ) জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে ক্যাটাগরি-৪ মাত্রার ঝড় হেলেন উপকূলে আঘাত হানে। এই আঘাতের পর ৬ ঘণ্টা ধরে ঝড়টি তাণ্ডব চালায়।
ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) জানিয়েছে, ফ্লোরিডা উপকূলের কিছু অংশে ১৫ ফুট (৪.৫ মিটার) পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে জলোচ্ছ্বাসের মাত্রা কমে আসবে, তবে ভূমিধস, তীব্র বাতাস ও বন্যার হুমকি থেকেই যাচ্ছে। কোথাও কোথাও ৫০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।রেকর্ড শুরু হওয়ার পর থেকে হেলেন যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানা ১৪তম শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। এই ঝড়ের প্রভাবে ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, টেনেসি ও ক্যারোলিনাসজুড়ে শক্তিশালী বাতাস এবং ভারি বৃষ্টিপাতের ঘটনা ঘটে।জর্জিয়ার গভর্নর ব্রায়ান কেম্প জানিয়েছেন, ফ্লোরিডায় আঘাত হানার পর ঝড়টি উত্তরে জর্জিয়ার দিকে অগ্রসর হয়, তাতে ১৫ জন নিহত হয়।জর্জিয়ার মধ্যাঞ্চলীয় হুইলার কাউন্টিতে টর্নেডোর আঘাতে একটি ভ্রাম্যমাণ বাড়ি উল্টে দু’জন মারা গেছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
জর্জিয়ার গভর্নর শুক্রবার বলেছেন, দেড় শতাধিক রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, রাজ্যজুড়ে ১৩০০ ট্রাফিক সিগন্যাল বন্ধ হয়ে গেছে এবং লোকজন এখনও ভবনে আটকা পড়ে আছে।সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, দক্ষিণ ক্যারোলিনায় অন্তত ১৭ জন মারা গেছে। উত্তর ক্যারোলিনার গভর্নর রয় কুপার জানিয়েছেন, ঝড়ে অন্তত দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।ফ্লোরিডার গালফ উপকূলের বাসিন্দা ব্রিয়ানা গ্যাগনিয়ার বিবিসিকে বলেন, হোমস বিচে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে পানি ঢুকতে দেখেন এবং বিকট শব্দ শোনার আগে জিনিসপত্র টেবিল ও বিছানার ওপর রাখতে শুরু করেন।“আমার পরিবার এবং আমি সবাই একে অপরের দিকে তাকাই। তারপর পানি ঢুকতে শুরু করে।”
গ্যাগনিয়ার বলেন, তিনি তার পোষা প্রাণী, মানিব্যাগ এবং পোর্টেবল চার্জার নিয়ে পরিবারের সঙ্গে সাঁতরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। সেখানে কাঁধ পর্যন্ত পানি ছিল।আবহাওয়াবিদ এরিক হুকস শুক্রবার বলেন, “আপনি যেখানে আছেন, সেখান থেকে ঝড় চলে গেছে; তার অর্থ এই নয় যে আপনি নিজের বাড়ি নিরাপদ।”