ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা জানিয়েছেন, ইউক্রেন রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় যেতে প্রস্তুত। তবে শর্ত হলো- রাশিয়াকে অবশ্যই ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বকে সম্মান করতে হবে।
বুধবার সন্ধ্যায় এক ভিডিও বার্তায় দিমিত্রো কুলেবা এ কথা জানিয়েছেন। খবর রয়টার্সের।
চীনা কূটনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে গভীর আলোচনার এক দিন পর ইউক্রেনের শীর্ষ কূটনীতিবিদ এই অবস্থান ব্যক্ত করলেন। ভিডিওতে কুলেবা জানান, ইউক্রেনের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো চুক্তিই সম্ভব নয়। তবে আলোচনা শুরুর জন্য রাশিয়ার তরফ থেকে কোনো প্রস্তুতি বা আগ্রহ দেখতে পাচ্ছেন না তিনি।
রাশিয়া ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর এই প্রথম ইউক্রেনের শীর্ষ কোনো কর্মকর্তা চীন সফরে গেলেন। ইউক্রেনের একটি সূত্র জানিয়েছে, কুলেবা চীন সফরে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে গভীর আলোচনা করেছেন।
বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে ভিডিও ভাষণে কুলেবা বলেছেন, ‘আমি দুটি মূলনীতির ওপর জোর দিয়েছি, যেগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রথমটি হলো- ইউক্রেনকে ছাড়া ইউক্রেনের বিষয়ে কোনো চুক্তি নয় এবং দ্বিতীয়টি, ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি পরিপূর্ণ সম্মান। যদি এ দুটি মূলনীতি প্রতিপালিত হয়, তাহলে আমরা যে কোনো আলোচনায় বসতে এবং সমাধান খুঁজতে প্রস্তুত।’
এর আগে ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কুলেবাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছিল, ইউক্রেন রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। তবে রাশিয়াকে অবশ্যই এ বিষয়ে সত্যিকারের আগ্রহ দেখাতে হবে। সেই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছিল, তবে ইউক্রেন রাশিয়ার তরফ থেকে সেরকম কোনো প্রস্তুতি দেখতে পাচ্ছে না।
এদিকে, ইউক্রেনের রণক্ষেত্রে রাশিয়ার সেনারা প্রতিদিনই একটু একটু করে অগ্রসর হচ্ছে দেশটির আরও গভীরে। এই অবস্থায় ইউক্রেন দরকষাকষির অবস্থানে কৌশলগতভাবে খানিকটা পিছিয়ে। তার পরও দেশটি আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেদের অবস্থানের পক্ষে ওকালতি করে যাচ্ছে।
অন্যদিকে ওয়াং ই ও দিমিত্রো কুলেবার বৈঠকের বিষয়ে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, দুই মন্ত্রী দীর্ঘ মেয়াদে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টি আলোচনা করেছেন। এবং চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, চীন ইউক্রেন থেকে খাদ্য আমদানি বাড়াবে।
মাও নিং আরও বলেছেন, ‘রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় পক্ষই আলোচনার জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পর্যন্ত ইঙ্গিত দিয়েছে, কিন্তু শর্তগুলো এখনো পরিপূর্ণ হয়নি। তবে আমরা শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরুর মাধ্যমে একটি যুদ্ধবিরতিসহ শান্তি ফিরিয়ে আনতে গঠনমূলক ভূমিকা পালনে প্রস্তুত।’