টানা আড়াই বছর ধরে চলছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে প্রায় ১২ হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
সংঘাতের জেরে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন আরও এক কোটি মানুষ। জাতিসংঘের বরাত দিয়ে বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ১১ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে জাতিসংঘ মঙ্গলবার জানিয়েছে। এমন অবস্থায় জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া বিশ্বনেতাদের চলমান এই সংঘাতের অবসানের জন্য সমস্ত সুযোগ কাজে লাগাতে আহ্বানও জানিয়েছে সংস্থাটি।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল জয়েস মসুয়া সংস্থাটির নিরাপত্তা পরিষদের এক অধিবেশনে বলেন, ‘দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এই যুদ্ধ শুরুর আড়াই বছর পরও পরিস্থিতি ক্রমাগত খারাপ হচ্ছে। মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। মানুষের দুর্ভোগ অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছানোও অব্যাহত রয়েছে।
আনাদোলু বলছে, ফ্রান্স ও ইকুয়েডরের অনুরোধে অনুষ্ঠিত এই অধিবেশনে ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিক ও বেসামরিক অবকাঠামোর ওপর রাশিয়ার হামলার বিষয়ে আলোচনা করা হয়। ইউক্রেনে এক কোটি লোককে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা এবং গত ২৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে বড় আকারের হামলা চলছে বলে এদিন জোর দিয়ে জানান মসুয়া।
তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়া সীমান্তের উভয় দিকের নতুন এলাকায় যুদ্ধের সাম্প্রতিক সম্প্রসারণে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’
রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের সামরিক অভিযান নতুন করে আরও ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে উল্লেখ করে মসুয়া বলেন, এই অঞ্চলে বেসামরিক নাগরিক এবং বেসামরিক অবকাঠামোকেও হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুযায়ী বেসামরিক নাগরিক এবং বেসামরিক অবকাঠামো ও বস্তুগুলোকে রক্ষা করার বাধ্যবাধকতা আমাকে অবশ্যই সব পক্ষকে স্মরণ করিয়ে দিতে হবে।’
সামরিক ক্রিয়াকলাপ বৃদ্ধি মানবিক সহায়তাসহ অন্যান্য কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছে এবং সাহায্য কর্মীদের বিপন্ন করছে বলে জোর দিয়ে ইউক্রেনের মানবিক কর্মকাণ্ডের জন্য ‘প্রায় ১.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার’ অনুদানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন জয়েস মসুয়া।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় বছরে পদার্পণ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এই সময়সীমার মধ্যে ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝিয়া— চারটি প্রদেশের আংশিক দখল নিয়েছে রুশ বাহিনী।
এই চার প্রদেশের রাশিয়ার দখলে যাওয়া অংশের সম্মিলিত আয়তন ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের এক-পঞ্চমাংশ।