রাজধানীর কূটনীতিক এলাকায় দায়িত্ব পালনকালে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে পুলিশ কনস্টেবল মনিরুল হককে খুব কাছ থেকে গুলি করেন কনস্টেবল কাওসার আহমেদ। পুলিশ কনস্টেবল কাওসার আহমেদের বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায়। তিনি উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের দাড়েরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়াত আলীর ছেলে।
কাওসারের পরিবারের সদস্যরা বলছেন, গত ১৪ বছর ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন কাওসার। তিনি হাসপাতালে গিয়ে মানসিক রোগের চিকিৎসাও নিয়েছেন। মানসিক সমস্যার কারণে তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কম কথা বলতেন। গেল কয়েক দিনও তেমন যোগাযোগও করেননি।
পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসীরা জানান, ২০০৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর পুলিশের চাকরিতে যোগদান করেন কাওছার। ২০১০ সালের দিকে প্রথম মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়। পরে তাকে সরকারিভাবে কয়েকবার পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। চাকরি করা অবস্থায় বেশ কয়েকবার অসুস্থ হলেও চিকিৎসা করানো হয়। তবে পারিবারিকভাবে কোনো সমস্যা ছিল না বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
কাওছারের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পরিবারের সদস্যরা স্বাভাবিকভাবেই চলাফেরা করছেন। বাড়ির ভেতরে মা ও স্ত্রী বসেছিলেন। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়াত আলী মাস্টার অসুস্থ অবস্থায় বিছানায় শুয়ে আছেন। কাওসারের দুই ছেলেও ছিল বাড়িতে। তারা দুজন স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে।
কাওসারের মা মাবিয়া খাতুন বলেন, আমারা ছেলে এমনিতে খুব ভালো। তার মাথার সমস্যা আছে। সে চাকরিতে যোগদানের পর থেকে অসুস্থ হয়। তার সঙ্গে গতকাল শনিবার রাত ৮টায় আমার শেষ কথা হয়। আমার সঙ্গে ভালোভাবেই কথা বলেছে। তবে কয়েকদিন ধরে বাড়িতে একটু কম কথা বলত আমার ছেলে।
কাওছারের স্ত্রী নিলুফার ইয়াসমিন সাথি বলেন, তিনি মানসিক রোগে আক্রান্ত। মাঝে মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়তেন। চার-পাঁচ দিন ধরে পরিবারের সঙ্গে কম কথা বলতেন। তাকে কয়েকবার পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়েছে। চিকিৎসার কাগজপত্র আমার স্বামীর কাছে আছে। আমাদের পারিবারিকভাবে কোনো সমস্যা ছিল না। তবে সে মানসিক রোগে আক্রান্ত হলে পরিবারের সঙ্গে কম যোগাযোগ করত এবং কথাও কম বলত।
কাওসারের প্রতিবেশী ও দৌলতপুর সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বলেন, কাউছার চাকরিতে যোগদানের বছর পর থেকে মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়। পরবর্তীতে তার চিকিৎসা করানোর পরে সুস্থ হলে আবার চাকরিতে যোগদান করেন তিনি।