কেন্দ্রীয় অনুমোদনের অপেক্ষায় দুই মহানগরের কমিটি, যে কোনো সময় ঘোষণা
নগর উত্তরের থানার নেতৃত্বে আসতে পারেন অন্তত ১৫ জন কাউন্সিলর
শুদ্ধি অভিযানে গ্রেফতার কেউ পদ পাচ্ছেন না
ছাত্রলীগ, যুবলীগের সাবেকরা জায়গা পাচ্ছেন
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের থানা কমিটি কেন্দ্রে জমা হয়েছে অনেকদিন আগে। একই সঙ্গে জমা হয়েছে ওয়ার্ড কমিটি। কয়েক দফা যাচাই-বাছাইও হয়েছে। এবার চূড়ান্ত অনুমোদনের পালা। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে নগর নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্র এ বিষয়ে আবার বসবে কিনা তা চূড়ান্ত নয়। ফলে যে কোনো সময় কমিটি ঘোষণা হতে পারে এমন ধারনা করছেন পদ প্রত্যাশীরা।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বর সবশেষ সম্মেলন হয়। সেদিন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি এবং দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবিরের নাম ঘোষণা করা হয়। সেই কমিটি ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেয়। ২০২২ সালের নভেম্বরে সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও প্রায় দুই বছর পরেও তা হয়নি।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের অধীনের ২৬ থানা ও ৬৪টি ওয়ার্ড রয়েছে। আর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের অধীনে রয়েছে ২৫ থানা ও ৭৫টি সাংগঠনিক ওয়ার্ড। যার প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ড কমিটিই মেয়াদোত্তীর্ণ। কোনো কোনো ওয়ার্ড কমিটির বয়স ১০ বছরের বেশি।
কমিটিতে যাদের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটা তাদের যোগ্যতারা কারণে করা হয়েছে, তাদের ইতিবাচক সাংগঠনিক সক্ষমতার কারণে করা হয়েছে। বিতর্কিত কাউকে আমরা রাখিনি। ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া কাউকেও রাখা হয়নি।
—শেখ বজলুর রহমান, সভাপতি, নগর উত্তর আওয়ামী লীগ
কাল বিলম্ব হলেও এবার কমিটি আসতে যাচ্ছে। আর এই কমিটির মাধ্যমেই দুই মহানগর আরও উজ্জীবিত হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান এ বিষয়ে ঢাকা মেইলকে বলেন, প্রায় ১৫টি থানায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে রানিং কাউন্সিলররা আসতে পারেন।
তবে বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখছেন না তিনি। বজলুর রহমান বলেন, এখন পদ পাওয়ার জন্য তারা সবাই খুব সক্রিয়। কিন্তু পদ পাওয়ার পর তাদের সেই সক্রিয়তা থাকবে না। কারণ তারা কাউন্সিলর। সে দিকে তাদের ব্যস্ততা থাকে।
নতুন ও পুরনোদের সমন্বয়ে থানা কমিটি প্রস্তাব করা হয়েছে৷ বিতর্কিত কাউকে জায়গা দেওয়া হয়নি।
—আবু আহমেদ মন্নাফি, সভাপতি, নগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ
একই সঙ্গে ২৬টি সাংগঠনিক থানার প্রায় ১৫টিতেই কাউন্সিলরা শীর্ষ পদে আসার বিষয়টি অনেকটাই চোখে পড়ার মতো বলে মনে করছেন অনেকেই।
এদিকে ঢাকা উত্তরের থানা সাজাতে সাবেক ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাদের রাখা হয়েছে বলে জানান শেখ বজলুর রহমান। রয়েছে নতুন ও পুরনোদের সমন্বয়।
এই নগর নেতা জানান, থানা কমিটি গঠন করতে বিতর্কিত কাউকে জায়গা দেওয়া হয়নি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান বলেন, যাদের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটা তাদের যোগ্যতারা কারণে করা হয়েছে, তাদের ইতিবাচক সাংগঠনিক সক্ষমতার কারণে করা হয়েছে। বিতর্কিত কাউকে আমরা রাখিনি। ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া কাউকেও রাখা হয়নি।
কমিটি আমরা আরও অনেক আগেই জমা দিয়েছি। আমাদেরকে পরে আবার এটা নিয়ে বসতে বলা হয়েছিল। আমরা বসেছি। এখন কেন্দ্র থেকে ঘোষণা হবে। তার আগে আমাদের সঙ্গে বসতেও পারে, নাও বসতে পারে।
—আবু আহমেদ মন্নাফি
উত্তরের মতো নগর দক্ষিণেও যোগ্যদের জায়গা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি।
প্রবীণ এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব জানান, নতুন ও পুরনোদের সমন্বয়ে থানা কমিটি প্রস্তাব করা হয়েছে৷ বিতর্কিত কাউকে জায়গা দেওয়া হয়নি।
মন্নাফি জানান, কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই নতুন ও পুরনোদের রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে বিতর্কিত কাউকে রাখা হয়নি।
সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরদের কি ধরণের পদে রাখা হয়েছে, জানতে চাইলে এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজী হননি তিনি।
তবে নগর দক্ষিণ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর আগের কমিটিতেও শীর্ষ পদে ছিলেন, আসন্ন থানা কমিটিতে কাউন্সিলরদের জায়গা শক্ত থাকবে এরইমধ্যে আলোচনা উঠেছে।