চাঁদাবাজির মামলায় বিচারিক আদালতে সাত বছরের কারাদণ্ড পাওয়া বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমানকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি অর্থপাচারের পৃথক মামলায় ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকেও বিচারিক আদালতের দেওয়া সাত বছরের কারাদণ্ড থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে তাদের আপিল মঞ্জুর করে এ রায় দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেন সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ পৃথক আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
আদালতে আমানের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও আইনজীবী নাজমুল হুদা। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী তারেক ভূঁইয়া। অন্যদিকে মামুনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আাইনজীবী ওমর সাদাত ও সাব্বির হামজা। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান।
আমান উল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে চাদাবাজির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৬ মার্চ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় পূর্ব আগানগরের রফিকুল আলম একটি মামলা দায়ের করেন। তার বিরুদ্ধে ২০০৪ সালের ২৬ জুনের এক ঘটনায় ২০০৫ সালে দুই পর্বে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। ওই মামলায় ২০০৭ সালের ৭ মার্চ আমানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। বিচার শেষে ২০০৮ সালের ৮ মে সাত বছরের কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করেন বিচারিক আদালত। এর বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে হাইকোর্টে আপিল করেন আমান। এরই ধারাবাহিকতায় আপিলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে আজ রায় দেন হাইকোর্ট।
অন্যদিকে ২০১১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ব্যবসায়ী মামুনের বিরুদ্ধে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করে দুদক। মামলার অভিযোগে বলা হয়, বিটিএল ও গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালের চেয়ারম্যান এম শাহজাদ আলী নেদারল্যান্ডের একটি ঠিকাদারি কোম্পানির বাংলাদেশের এজেন্ট ছিলেন। ওই কোম্পানি রেলওয়ের সিগন্যালিং আধুনিকীকরণের টেন্ডার পান। কিন্তু ২০০৩ সালে কার্যাদেশ চূড়ান্ত করার সময় গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ওই কাজের বিপরীতে তার কাছে অবৈধ কমিশন দাবি করেন। নতুবা কার্যাদেশ বাতিল করার হুমকি দেন। এরপর শাহজাদ আলী ২০০৪ সালে ৬ কোটি এক লাখ ৫৭ হাজার ৭৬২ টাকা মামুনের লন্ডনের ন্যাটওয়েস্ট ব্যাংকের হিসাবে জমা করেন।
এ মামলায় ২০১৯ সালের ২৪ এপ্রিল গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালত। এছাড়া ১২ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। রায়ে লন্ডনের ন্যাটওয়েস্ট ব্যাংকের হিসাবে থাকা ৪৪ হাজার ৬১০ দশমিক শূন্য ৮ ব্রিটিশ স্টালিং (বাংলাদেশি টাকায় ৬ কোটি এক লাখ ৫৭ হাজার ৭৬২ টাকা) বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেন। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার আপিলের শুনানি শেষে রায় দেন হাইকোর্ট। ২০০৭ সালের ৩০ জানুয়ারি গ্রেপ্তার হন গিয়াস উদ্দিন আল মামুন। চলতি বছরের ৬ আগস্ট তিনি কারামুক্ত হন।