সিরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ হামা শহরকে তিন দিক দিয়ে ঘিরে ফেলেছে বিদ্রোহীরা। যুদ্ধবিষয়ক পর্যবেক্ষক সংস্থা ‘সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’ বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানায়। বিদ্রোহীরা যেন হামার নিয়ন্ত্রণ না নিতে পারে, সেজন্য তাদের লক্ষ্য করে পাল্টা হামলা শুরু করেছিল সিরিয়ার সরকারি বাহিনী।
তবে পর্যবেক্ষক সংস্থাটি জানিয়েছে, পাল্টা আক্রমণ সত্ত্বেও হামাকে ঘিরে ধরতে সমর্থ হয় হায়াত তাহরির আল-শাম নামে ইসলামপন্থি বিদ্রোহী দলটি। গতকাল পর্যন্ত তারা হামা থেকে মাত্র তিন-চার কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল। তিন দিক দিয়ে ঘিরে ধরায় সিরিয়ার সরকারি বাহিনী পিছু হটলে শুধু হোমসের দিকে যেতে পারবে। তবে বিদ্রোহীদের দমনে হামার দিকে ট্যাঙ্ক, অস্ত্র ও বিপুল গোলাবারুদ নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানায় পর্যবেক্ষক সংস্থাটি।
গত ২৭ নভেম্বর আকস্মিকভাবে সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহৎ শহর আলেপ্পো দখল করে নেয় বিদ্রোহীরা। এর পর তারা মধ্যাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শহর হামার দিকে অগ্রসর হয়। শহরটি প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ এবং দেশটির সেনাবাহিনীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি বিদ্রোহীরা হামা দখল করতে পারে, তাহলে রাজধানী দামেস্ককে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে পারবে তারা। আর দামেস্ক বিচ্ছিন্ন হলে নড়েবড়ে হয়ে যাবে আসাদের ক্ষমতা। এ কারণে শহরটি নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তিনি।
সেনাবাহিনীর একটি সূত্র বার্তা সংস্থা সানাকে গতকাল জানায়, হামার উত্তরাঞ্চলে সকাল থেকে বিদ্রোহীদের সঙ্গে তাদের তীব্র লড়াই চলছে। এ ছাড়া বিদ্রোহীদের ওপর সিরিয়া ও রুশ বাহিনী যৌথ বিমান হামলা চালিয়েছে। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণে সেনাবাহিনীকে চাঙ্গা করতে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ তাদের বেতন ৫০ শতাংশ বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে সিরিয়ায় গত সপ্তাহে যৌথ সামরিক অভিযানে প্রায় ২ হাজার বিদেশি-সমর্থিত তাকফিরি বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন। এ অভিযান সিরিয়ার সামরিক বাহিনী ও তাদের রুশ মিত্রদের সমন্বয়ে পরিচালিত হয়। অভিযানের অংশ হিসেবে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে বিদ্রোহী আস্তানা ও জমায়েত লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। খবর দ্য গার্ডিয়ান ও এএফপির।