সুন্দরবনে বনজীবিদের (বাওয়ালি (কাঠ সংগ্রাহক), মৌয়াল (মৌচাক সংগ্রাহক) এবং জেলেদের পর্যবেক্ষণ ও সংরক্ষিত বনাঞ্চলে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ডিজিটাল পরিচয়পত্র চালু করতে যাচ্ছে বন বিভাগ।
এই স্মার্ট পরিচয়পত্র ব্যবস্থার মাধ্যমে যদি কোনো কার্ডধারী নিষিদ্ধ এলাকায় প্রবেশ করেন, তাহলে বন প্রহরীদের কাছে এসএমএস সতর্কবার্তা পৌঁছে যাবে। ফলে তাৎক্ষণিকভাবে ওই ব্যক্তিকে শনাক্ত ও ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।
সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এ জেড এম হাসানুর রহমান বলেন, “ডিজিটাল পরিচয়পত্র তৈরির জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছি। ২২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭টি প্রতিষ্ঠানকে সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। চলতি মাসেই একটি প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করা হবে।”
তিনি আরও জানান, জুন মাসের মধ্যেই সম্পূর্ণ তথ্যভান্ডার (ডেটাবেইস) প্রস্তুত করে কার্ড বিতরণ শুরু করার লক্ষ্য রয়েছে।
এ উদ্যোগ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার ভিত্তিতে নেওয়া হয়েছে। সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল জেলে, কাঁকড়া সংগ্রাহক, মৌয়াল ও গোলপাতা সংগ্রহকারীদের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য একটি ডিজিটাল ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছিল মন্ত্রণালয়।
প্রত্যেকটি স্মার্ট কার্ডে একটি কিউআর কোড থাকবে, যেখানে কার্ডধারীর ছবি, ঠিকানা, বনাঞ্চলে প্রবেশ ও প্রস্থান তারিখ, ব্যবহৃত উপকরণ এবং পরিশোধিত রাজস্বের তথ্য থাকবে। এছাড়া এই ব্যবস্থার মাধ্যমে মোবাইল ফোনে বন রাজস্ব পরিশোধ করা যাবে, ফলে আর বন অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না।
সুন্দরবনে পর্যটন নিয়ন্ত্রণে আরও দক্ষতা আনার জন্য ট্যুর অপারেটর ও গাইডদের জন্যও পৃথক তথ্যভান্ডার তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।
বন বিভাগের কর্মকর্তাদের ধারণা, এই উদ্যোগের ফলে বন ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আসবে, সম্পদ ব্যবস্থাপনা আরও সহজ হবে এবং বন সুরক্ষা আরও জোরদার হবে।