খাবারের পর এক কাপ চা হলে জমে বেশ। তবে সেই চা-ই যদি হয় হজম উপকারী। তাহলে তো সোনায় সোহাগা।অনেক দেশের রীতি অনুযায়ী রাতে ভারী খাবারের পর ওয়াইন পান করা হয়। কেউ আবার বেছে নেন কফি।“তবে খাবারের পর হজম-সহায়ক পানি পান করা ভালো অভ্যাস”- ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মন্তব্য করেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া নিবাসী পুষ্টিবিদ অ্যামান্ডা সসিডা।
অন্ত্রের জন্য উপকারী এরকম ছয়টি পানীয়র কথা জানিয়েছেন তিনি।
পানি
সর্বপ্রথমেই এই তরলের নাম আসবে। কারণ খাবার হজম করতে ও ভাঙতে পানির প্রয়োজন।
মায়ো ক্লিনিক জানাচ্ছে, ‘পুষ্টি শোষণ ও মল নরম করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে দরকার পানি।’
“যদিও এর কোনো স্বাদ নেই। তাই চমৎকারিত্ব আনতে সাধারণ খাওয়ার পানিতে চিনি ছাড়া হালকা লেবুর রস যোগ করা যেতে পারে”- পরামর্শ দেন সসিডা।
এছাড়া শসা, স্ট্রবেরি, পুদিনা পাতা-সহ নানান উপাদান পানিতে ভিজিয়ে রেখে আনন্দদায়ক পানীয় তৈরি করা যায়।
আদা চা
সসিডা বলেন, “যে কোনো ভারী খাবার খাওয়ার পর এককাপ আদা চা পানে আনবে স্বস্তি।”
প্রায় ৪শ’র বেশি উপকারী উপাদান রয়েছে এই মসলাতে।
‘ফুড সায়েন্স অ্যান্ড নিউট্রিশন’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, ‘আদাতে থাকা ‘কারমিনাটিভ’ পেটব্যথা কমায়, গ্যাস ও অ্যাসিড রিফ্লাক্সে উপকার দেয়, পেট ফোলা ও অস্বস্তি দূর করতে পারে।’
সসিডা পরামর্শ দেন, “প্রতিকাপ পরিমাণ পানিতে এক ইঞ্চি পরিমাণ আদা দিয়ে, ফুটিয়ে নিতে হবে। তারপর চা পাতা দিয়ে ১০ মিনিট রেখে দিলেই হয়ে যাবে সুস্বাদু হজম সহায়ক আদা চা।”
পুদিনার চা
“পেট খারাপে মিন্ট বা পুদিনার পানি পান করার রীতি অনেক আগে থেকেই চলে আসছে” বলেন সসিডা।
‘জার্নাল অফ ক্লিনিকাল গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি’তে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে- ‘পিপারমিন্ট এসেনশল অয়েল’ খাওয়ার পর পেটের ব্যথা নিরসণে কার্যকর প্রভাব রাখে।’
যদি গ্যাসের কারণে বুকজ্বলে তবে পুদিনা পাতার রস বা মিন্ট- এড়ানোই ভালো। কারণ এটি ‘অ্যাসিড রিফ্লাক্স’ বাড়িযে দেয়- জানান সসিডা।
রাতের খাবারের পর ‘মিন্ট ড্রিংক’য়ে চুমুক দিতে এক টেবিল-চামচ বা দুতিনটি টাটকা পুদিনা পাতা এক কাপ গরম পানিতে ১০ মিনিট চুবিয়ে রাখতে হবে। তারপর ছেঁকে পান করা যাবে।
কাম্বুচা
খাওয়ার পর বুদবুদ ওঠা পানীয় গ্রহণ করতে চাইলে বেছে নেওয়া যায় ‘কাম্বুচা’।
“গাঁজানো পদ্ধতিতে তৈরি এই চা বিভিন্ন স্বাদে বাজারে পাওয়া যাবে। যাতে রয়েছে অন্ত্রের জন্য উপকারী উপাদান।”- বলেন সসিডা।
কেফির
দুগ্ধজাত পানীয়। পাতলা দইয়ের মতো। দুধ গাঁজিয়ে তৈরি করা হয়।
সসিডা বলেন, “দুধের চাইতে খাবারের পর কেফির পান করা উপকারী। কারণ মিলবে অন্ত্রের জন্য উপকারী প্রোবায়োটিকস। আর প্রাকৃতিকভাবেই এতে ‘ল্যাক্টোস’য়ের পরিমাণ কম থাকে।”
আর কৃত্রিম স্বাদ দেওয়া দইয়ের চাইতে সাধারণ স্বাদের কেফির বেশি উপকার দেয়।
তিতা পানীয়
হজম ভালো হওয়ার জন্য নানান ধরনের তিতা পানীয় পান করা উপকারী। এরমধ্যে রয়েছে আর্টিচোক’য়ের পাতা, যষ্টিমধু বা ‘ওয়ার্মউড’ বাংলায় যাকে বলে ‘সোমরাজ’য়ের পাতা।
এগুলো লালা ও হজম রস উৎপাদন বাড়ায়।
“এসব পাতার রস কয়েক ফোঁটা পানিতে গুলিয়ে খাবারের পর গ্রহণ করলে হজমে সহায়ক ভূমিকা পালন করে, গ্যাস ও পেটফোলাভাব তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা কমায়”- বলেন সসিডা।