বর্ষীয়ান অভিনেতা ও আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক প্রায় এক মাস ধরে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে।টানা ১৪ দিন ধরে আইসিইউতে জ্ঞানহীন রয়েছেন এই তারকা। কোনোভাবেই চোখ খুলছেন না।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ফারুকের ছেলে রোশন হোসেন পাঠান শরৎ।
তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মার্চের ১৫ তারিখে বাবার দুইবার খিঁচুনি হয়। এরপর বাবাকে প্রথমবার আইসিইউতে নেওয়ার তিনদিন পর ১৮ মার্চ কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। ২১ তারিখ তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তখন টেস্ট করে চিকিৎসকরা ব্রেনের নার্ভে ইনফেকশন পান। এরপর বাবাকে পুনরায় আইসিইউতে নেওয়া হয় এবং তখন থেকে ঘুম থেকে উঠছেন না। টানা ১৪ দিন বাবা চোখ খোলেননি, ওনার শরীর নড়ছে খুবই কম। এমনও দিন গিয়েছে একদমই নড়াচড়া করেননি। ’
শরৎ আরও বলেন, ‘চিকিৎসকরা চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এখন দেশবাসীর কাছে বাবার জন্য দোয়া চাইনি। আল্লাহ চাইলেই বাবা আবার সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসতে পারেন। ’
তিনি আরও জানান, গত ৪ মার্চ সিঙ্গাপুরে যান ফারুক। চেকআপের পর তখন তার ইনফেকশন ধরা পড়লে হাসপাতালে ভর্তি হন এই অভিনেতা।
প্রায় পাঁচ দশক ধরে বড় পর্দা মাতিয়েছেন ফারুক। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে ঢাকা-১৭ আসনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন চিত্রনায়ক ফারুক। ১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’তে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে ফারুকের অত্মপ্রকাশ ঘটে। প্রথম সিনেমায় তার বিপরীতে ছিলেন মিষ্টি মেয়ে কবরী। এরপর ১৯৭৩ সালে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র খান আতাউর রহমানের পরিচালনায় ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ও ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতার আলোর মিছিল এ দুটি সিনেমায় পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
১৯৭৫ সালে তার অভিনীত ‘সুজন সখী’ ও ‘লাঠিয়াল’ সিনেমা দুটি ব্যাপক ব্যবসা সফল হয়। ওই বছর ‘লাঠিয়াল’র জন্য তিনি সেরা-পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। ১৯৭৬ সালে ‘সূর্যগ্রহণ’ ও ‘নয়নমণি’, ১৯৭৮ সালে শহীদুল্লাহ কায়সারের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত আব্দুল্লাহ আল মামুনের ‘সারেং বৌ’, আমজাদ হোসেনের ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’সহ বেশকিছু সিনেমায় ‘মিয়া ভাই’খ্যাত চিত্রনায়ক ফারুকের অভিনয় প্রশংসিত হয়।