পূর্ব জেরুজালেমের পুরনো শহরে কট্টরপন্থী ইহুদিদের একটি মিছিলের অনুমতি দিয়েছে নাফতালি বেনেটের নেতৃত্বাধীন নতুন ইসরায়েলি সরকার। এই মিছিলকে ঘিরে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে আবারও সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এর আগে ইসরায়েলি পুলিশ অনুমতি না দেয়ায় আয়োজকরা মিছিলটি বাতিল করে। কিন্তু বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিদায়ী সরকার ক্ষমতা ছাড়ার আগে গত মঙ্গলবার এই মিছিলের অনুমতি দিয়ে যায়। নতুন নির্বাচিত সরকারও মিছিলে সম্মতি জানাল।
ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, দেশটির পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে নতুন সরকারের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী ওমর বারলেভ ইহুদি মিছিল আয়োজনের অনুমতি দেন। তিনি বলেছেন, পুলিশ পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে।
‘পতাকার মিছিল’, নামে এই মিছিলে বেশ কয়েকটি কট্টরপন্থী ইহুদি সংগঠনের অংশগ্রহণ করার কথা রয়েছে। পুরনো নগরীর দামেস্ক গেট থেকে মুসলিম এলাকার ভেতর দিয়ে মিছিলটি এগিয়ে যাবে।
তবে মিছিলকারীদের মুসলিম এলাকায় প্রবেশ করতে দেয়া হবে কিনা তা এখনও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। এর আগে ইসরায়েলি পুলিশ মুসলিম এলাকার ভেতর ইহুদি-মিছিল করতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল।
গাজা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস গত সপ্তাহের সোমবার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, মিছিল অনুষ্ঠিত হলে আবারও সহিংসতা হতে পারে। হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আমরা আশা করি বৃহস্পতিবার যেন ১০ মে’তে পরিণত না হয়।’
রমজান মাসে পূর্ব জেরুজালেম ও আল আকসা মসজিদে কট্টরপন্থী ইহুদি ও ইসরায়েলি পুলিশ ফিলিস্তিনিদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালানোর পর গত ১০ মে গাজা থেকে ইসরায়েলের দিকে রকেট হামলা শুরু করে হামাস। এরপর ইসরায়েলেও হাজায় ব্যাপকভাবে বোমা হামলা চালায়। টানা ১১ দিনের এই সংঘর্ষে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় অন্তত ২৪২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন যাদের মধ্যে বেশ কিছু শিশুও রয়েছে। আর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হন ১৩ জন। সোমবারের বিবৃতিতে সেই সংঘর্ষের কথাই মনে করিয়ে দেয় হামাস।
এদিকে পূর্ব জেরুজালেমে বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের একটি পক্ষ মিছিলের দিনকে ‘ক্রোধের দিন’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। এর ফলে ওই এলাকায় আবারও সহিংসতা ঘটতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মাদ শতেয়াহ বলেছেন, ‘এর মাধ্যমে আমাদের জনগণকে উস্কানি দেয়া হচ্ছে এবং এটি আমাদের জেরুজালেম ও পবিত্র স্থানগুলোর ওপর আগ্রাসন।’
মিছিলকে কেন্দ্র করে জেরুজালেমে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস তাদের কর্মী ও পরিবারের সদস্যদের পুরনো শহরে ঢুকতে নিষেধ করেছে।