বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ঈদের আগেই বাজারে ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকার নতুন নোট আসছে। তবে টাকায় কোনো ব্যক্তির ছবি থাকবে না। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রাকৃতিক দৃশ্য, ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার ছবি থাকবে নোটগুলোতে।
শনিবার (২৪ মে) সকালে পল্লী কর্মী-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) অডিটোরিয়ামে ক্রেডিট এনহেন্সমেন্ট স্কিমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গভর্নর এসব কথা বলেন।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)-এর আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় বাংলাদেশে প্রথম ‘ক্রেডিট এনহ্যান্সমেন্ট স্কিম এর উদ্যোগ নিয়েছে।
বাংলাদেশে ব্যাংকের গভর্নর ছাড়াও পিকেএসএফের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান,আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারক ও বাংলাদেশে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের টাকা ছাপানো শুরু হয়ে গেছে। তিনটা নোট আসছে শিগগির। সেটা হচ্ছে ১ হাজার টাকার নোট, ৫০ টাকা ও ২০ টাকা। এটা ঈদের আগেই আমরা পাবো। এখানে কোন ব্যক্তির ছবি থাকবে না। এখানে আমাদের প্রাকৃতিক দৃশ্য, আমাদের ঐতিহ্য ভবন ইত্যাদির ছবি থাকবে।
টাকায় মন্দির, গীর্জা স্থান পেয়েছে নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে কি না প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সেগুলো থাকবে। সেটা মসজিদই হোক কিংবা মন্দিরই হোক, সেখানে আমরা কোন পার্থক্য করছি না।
যুক্তরাজ্যে সাবেক সরকারের বেসরকারি বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ছেলের সম্পদ ফ্রিজ করা হয়েছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা খুবই আশাবাদি। আমাদের যোগাযোগ ও প্রধান উপদেষ্টার প্রচেষ্টা সবখানে তিনি বলেন চুরি করা অর্থ আমরা ফেরত নিয়ে আসবো। এটা আমাদের পলিটিক্যাল কমিটমেন্ট। সব সরকারের এরকম পলিটিক্যাল কমিটমেন্ট থাকা উচিত।
তিনি বলেন, আমরা দেখছি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তারাও একটা চাপের মধ্যে আছে। ফাইনান্সিয়াল টাইম, লন্ডন টাইম, আল জাজিরা বাংলাদেশের অর্থপাচার নিয়ে বড় বড় আর্টিকেল লিখছে। ব্রিটিশ এমপিরাও এটায় সহযোগিতা করছে, ব্রিটিশ এনজিওরা সহযোগিতা করছে। এর ফলে একটা চাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলেই দেখলাম ব্রিটিশ ক্রাইম এজেন্সি কিছু সম্পদ ফ্রিজ করেছে।
সামনের দিকে এটা বেগবান করতে হবে। আরও অনেক প্রতিষ্ঠান আছে, ব্যক্তি আছে যাদের সম্পদ লন্ডনে আছে, যুক্তরাজ্যেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। সেগুলোকে চিহ্নিত করে ফ্রিজ করতে পারলে আমরা খুশি হবো, যোগ করেন গভর্নর।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডিজিটাল ব্যাংকের বিষয়গুলো আমরা ফের রিভিউ করছি। আগে যেভাবে হয়েছিল, যে ধরনের কনসিডারেশনে সেটা সঠিক ছিল না। এজন্য সেটা বাস্তবায়ন হয়নি। আমরা এটাকে নতুন করে রিভিউ করবো। আগে যারা লাইসেন্স পেয়েছে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এর সিদ্ধান্ত হয়নি। সেটা থাকতেও পারে, কিন্তু এখন কিছু আমি বলছি না।
তিনি বলেন, মাইক্রো ফাইন্যান্স সেক্টর যদি অটোমেটেড হয়ে যায়। ইফিশিয়েন্টলি কাজ করে তাহলে পরিচালন ব্যয় অনেক কমে যায়। যারা দক্ষ হবে তারাই টিকে থাকবে এই প্রতিযোগিতামূলক বাজারে। আমরা রেগুলেটরি ইন্টারভেনশন করবো না।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মাইক্রোএন্টারপ্রাইজ ফাইন্যান্সিং অ্যান্ড ক্রেডিট এনহেন্সমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় এই স্কিমের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া সহজ হবে, যা এতদিন ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের (এমএফআই) পক্ষে সংগ্রহ করা কঠিন ছিল।