বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, এবারের নির্বাচন ’১৪, ’১৮ ও ’২৪-এর মত হলে জাতির ভাগ্যে চরম দুর্ভোগ নেমে আসবে। শনিবার সকাল সোয়া ৯টায় মোটরসাইকেল শোভাযাত্রার উদ্বোধনকালে খুলনার জিরো পয়েন্টের পথ সভায় একথা বলেন তিনি।
প্রশাসনের প্রতি আহŸান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা নিরপেক্ষ থাকুন। আগামী নির্বাচন স্বচ্ছ করুন। প্রত্যেক প্রার্থী যেন সমান সুযোগ পেয়ে নির্বাচনী কাজ করতে পারেন। অতীতে যারা কোনো বিশেষ দলের পক্ষে কাজ করেছেন, সেই ওসি, এসপিরা সব পালিয়ে গেছে। তারা এখন ট্রাইব্যুনালে হাজির। প্রধান বিচারপতি পালিয়ে গেছে। বায়তুল মোকাররমের খতিব পালিয়ে গেছে। ডিআইজি পালিয়ে গেছে। পুলিশ কমিশনার পালিয়ে গেছে। ওসিরা চাকুরি ছেড়ে বর্ডার দিয়ে ইন্ডিয়া চলে গেছে। আপনাদের বিরুদ্ধেও যদি সেই অভিযোগ আসে আপনারা কিন্তু পালানোর পথ পাবেন না।’
নির্বাচনকে কালো টাকার প্রভাবমুক্ত রাখার আহŸান জানিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘যারা অতীতে ঘের দখল করেছে, মন্দির ভেঙেছে এবার জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করার ঘোষণা দিয়ে শান্তিতে থাকার জন্য দাঁড়িপাল্লায় ভোট দেয়ার শপথ করেছে। কর্তৃত্ববাদী সরকারের কালো যুগ পেরিয়ে আমরা আজ এক নতুন বাংলাদেশের পথে। আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই। ৫৪ বছরে অনেক দল ও মার্কা দেখেছি। নৌকা, লাঙ্গল, ধানের শীষ দেখেছি। প্রতিটি শাসনে দুর্নীতি হয়েছে, লুটপাট হয়েছে, ক্ষুধা, দারিদ্র্য, অন্য, বস্ত্র, বাসস্থানের ব্যবস্থা হয়নি। সুতরাং মানব রচিত বিধান দিয়ে দেশ পরিচালিত হলে দেশে শান্তি আসতে পারে না এটি প্রমাণিত। তাই আসুন আগামীতে কুরআনের রাষ্ট্র গড়ি।’
খুলনা-৫ আসনের (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) সংসদ সদস্য প্রার্থী মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে এক মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা খুলনার জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে গুটুদিয়া, ডুমুরিয়া, খর্ণিয়া, চুকনগর, আঠারোমাইল, রুদাঘরা, রঘুনাথপুর, শাহপুর, ধামালিয়া, জামিরা, ফুলতলা, দামোদর হয়ে শোভাযাত্রাটি শিরোমনি শহিদ মিনার চত্বরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত পথ সভার মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
শোভাযাত্রা তিনি বলেন, ‘সুশাসন ও শান্তির জন্য পরিবর্তন, উন্নত ও আধুনিক খুলনা গড়ে তোলার লক্ষে আমরা সর্বস্তরের মানুষের কাছে পরিবর্তনের এ বার্তা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই আজকের এই আয়োজন। সুখে-দুঃখে মানুষের কল্যাণে আমরা সবসময় আছি এবং দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে এ ভূমিকা পালন করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। দীর্ঘ বছরের পর বছর ধরে আমাকে স্বাভাবিকভাবে কার্যক্রম করতে দেয়া হয়নি। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পরে আমরা স্বাভাবিকভাবে কার্যক্রম করতে পারছি আলহামদুলল্লিাহ।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। এরই পূর্বে মানুষ সব দলকে দেখেছে, তাই এখন মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে পরিবর্তন চায়, তাই তারা বসবাসযোগ্য শান্তির বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দাঁড়িপাল্লা মার্কায় ভোট দেবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, ‘এরইমধ্যে নতুন প্রজন্ম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবর্তন এনেছে। তারা ৫৪ বছরের অপশাসনের দেশকে বদলে দিয়েছে। যার ধারাবাহিকতায় জাতি আগামী নির্বাচনেও দেশে একটি পরিবর্তন আনবে ইনশাআল্লাহ।’
যারা ১০০ কোটি টাকা নিয়ে নমিনেশন এনেছে তাদের অসৎ উদ্দেশ্য আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা নির্বাচিত হলে দুর্নীতি করবে।’
সুতরাং সৎ যোগ্য প্রার্থীদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করার মধ্যদিয়ে আগামীর দেশকে পরিবর্তনের আহŸান জানান মিয়া গোলাম পরওয়ার।
খুলনার জিরো পয়েন্টের পথসভায় সভাপতিত্ব করেন হরিণটানা থানা আমির জি এম আব্দুল গফুর। বক্তৃতা করেন খুলনা-১ আসনের (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা শেখ মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম, অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস ও গাউসুল আযম হাদী, শেখ সিরাজুল ইসলাম, এড. আবু ইউসুফ মোল্লা, মোস্তফা আল মুজাহিদ, আশরাফুল আলম, খুলনা জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ইউসুফ ফকির ও সেক্রেটারি ইলিয়াস হোসাইন, ডুমুরিয়া উপজেলা আমির মাওলানা মোক্তার হোসেন।
এছাড়া ফুলতলা উপজেলা আমির অধ্যাপক আব্দুল আলিম, খানজাহান আলী থানা আমির ডাঃ সৈয়দ হাসান মাহমুদ টিটো, হরিণটানা থানা সেক্রেটারি এড. ব ম মনিরুল ইসলাম, মাওলানা হাবিবুর রহমান, গাজী সাইফুল্লাহ, গাজী মোর্শেদ মামুন, মাওলানা সাইফুল হাসান, আব্দুর রশিদ, মোমিনুর রহমান, লিমন, মফিজুর রহমান, আবু তাহের, ইমরান হোসেন, আব্দুস সাত্তার, আল আমিন গোলদার, আলী আকবার মোড়ল, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ প্রমুখ।

