সোমবার রাত থেকে টানা বৃষ্টির কারণে খুলনা শহরের অধিকাংশ সড়ক ও গলিপথ পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে জনজীবন চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
বৃষ্টির পানিতে বহু বাড়ি ও দোকানের নিচতলা ডুবে গেছে।
সোমবার রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে অব্যাহত ছিল। দুপুর নাগাদ অধিকাংশ সড়কে হাঁটুসমান পানি জমে যায়। শহরের অনেক রাস্তা ডুবে যাওয়ায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে এবং বিভিন্ন এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ আমিরুল আজাদ বাসসকে জানান, সোমবার দুপুর ১২টা থেকে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৮৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা এ বছরের সর্বোচ্চ।
তিনি আরও জানান, আগামী কয়েকদিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে এবং আবহাওয়া তাড়াতাড়ি উন্নতি নাও হতে পারে।
নিচু এলাকাগুলোতে পানিবদ্ধতা বেশি দেখা গেছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো হলো— রয়্যাল মোড়, বাইটিপাড়া, খানজাহান আলী রোড, শামসুর রহমান রোড, আহসান আহমেদ রোড, বাস্তহারা, চাঁনমারি, লবণচোরা, টুটপাড়া, মিস্ত্রীপাড়া, কেডিএ অ্যাভিনিউ এবং পিটিআই মোড়।
এই জলাবদ্ধতা সাধারণ মানুষের, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শহরের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শামীম হাসান বলেন, “বৃষ্টির পানি প্রায় আমার ঘরে ঢুকে যাচ্ছিল। এলাকায় ড্রেন ও রাস্তার উন্নয়নকাজ চলছে, কিন্তু ঠিকাদারদের ধীরগতির কারণে অল্প বৃষ্টিতেই এমন দুর্ভোগ দেখা দেয়।”
তিনি অভিযোগ করেন, “উন্নয়নকাজের জন্য দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অংশে রাস্তা সরু হয়ে গেছে। এর ফলে যানজট ও জনভোগান্তি আরও বেড়েছে।”
খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) কর্তৃক চলমান ড্রেনেজ উন্নয়ন কাজ গত ৩-৪ বছর ধরে ধীরগতিতে চলার কারণে বৃষ্টির পানি দ্রুত নামছে না।
টুটপাড়ার বাসিন্দা সুমন হাসান বলেন, “আমার বাড়ির সামনে কেওয়াসা (KWASA) গত দুই বছর ধরে রাস্তা খুঁড়ে রেখেছে, কিন্তু এখনো মেরামত করা হয়নি। ড্রেনের কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় পানি বের হচ্ছে না এবং এলাকাটি ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে পানির নিচে রয়েছে।”
হাজী মোহসিন রোডের বাসিন্দা তারিকুল ইসলাম জানান, “বৃষ্টির কারণে রাস্তায় পানি জমে গেছে, রিকশাও পাওয়া যাচ্ছে না। যে কয়েকটি রিকশা চলছে, তারা সাধারণত ৩০ টাকা ভাড়া নিলেও এখন ৬০-৭০ টাকা নিচ্ছে।”
রিকশাচালক ইসমাইল বলেন, “রাস্তায় পানি উঠে গেছে, রিকশার মোটরে পানি ঢুকলে আর চালানো যায় না। তাই আমরা বাধ্য হয়েই বেশি ভাড়া নিচ্ছি।”