
খুলনা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দারের অপসারণ দাবিতে ফের বিক্ষোভ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
শনিবার দুপুর থেকে তারা খুলনা মহানগর পুলিশের সদর দপ্তর ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভে খুলনার বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদেরও অংশ নিতে দেখা গেছে।
তারা সড়কের দুই পাশ আটকে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন স্লোগানে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। এর ফলে খানজাহান আলী সড়কের সুন্দরবন কলেজ থেকে রূপসা ট্রাফিক মোড় পর্যন্ত যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনা মহানগর শাখার মুখপাত্র রুমি রহমান সাংবাদিকদের বলেন, “খুলনার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহ রকমের অবনতির দিকে যাচ্ছে। মানুষ নিজেদের সম্পূর্ণ অনিরাপদ মনে করছে। পুলিশ কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। আমরা অবিলম্বে তার অপসারণ চাই।”
পুলিশ ও বিক্ষোভকারীরা জানান, মঙ্গলবার খুলনা নগরের ইস্টার্ন গেইট এলাকা থেকে স্থানীয় লোকজন ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা এসআই সুকান্ত কুমার দাসকে আটকে মারধর করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। খুলনায় একটি মামলায় সাক্ষ্য দিতে এসে এ ঘটনার শিকার হন তিনি। পরে রাতে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়।
এর প্রতিবাদে খুলনা পুলিশ কমিশনারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করেন নেতাকর্মীরা। বুধবার তারা এসআই সুকান্তকে গ্রেপ্তারের দাবিতে আল্টিমেটাম দেন। বৃহস্পতিবার সকালে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলা থেকে এসআই সুকান্তকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
ওইদিন বিকালে পুলিশ কমিশনার জুলফিকার আলী বলেছিলেন, “একজন সরকারি কর্মচারী গ্রেপ্তার সংক্রান্ত বিধি-বিধান অনুসরণ করতে সময় লেগেছে।”
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার এবং কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপেই এসআই সুকান্তকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ওইদিন বিকাল থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা পুলিশ কমিশনারের অপসারণের দাবিতে ফের বিক্ষোভ শুরু করে। পরে তারা দাবি বাস্তবায়নের জন্য শনিবার দুপুর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হওয়ায় বিকাল থেকে ফের বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা।
এদিকে, খুলনায় সফররত প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম খুলনা প্রেসক্লাব পরিদর্শনে গেলে সেখানে যান আন্দোলনকারীরা। তারা প্রেস সচিবের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং কেএমপি কমিশনারের অপসারণের ইস্যুতে কথা বলেন।
৫ অগাস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর এসআই সুকান্তের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়। এরপর তাকে প্রথমে ঢাকায় এবং পরে চুয়াডাঙ্গায় বদলি করা হয়।