
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে এ দেশের ছাত্র-জনতা অকাতরে জীবন দিয়েছে। আমরা আমাদের সন্তানদের রক্তের ঋণের ওপর দাঁড়িয়ে আছি। জুলাই বিপ্লবের পরে এখন আমাদের আত্মশুদ্ধির সময় এসেছে। এ কথা মনে ধারণ করে সততা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে সরকারি দায়িত্ব পালন করতে হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ বেতারের খুলনা কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে বেতারের সম্মেলনকক্ষে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।
তথ্য ও সম্প্রচার সচিব বলেন, আমাদের এখন আরও সৎ হওয়া প্রয়োজন। সরকারের যে প্রতিষ্ঠানে আমরা কাজ করি, সেটিকে যেন নিজের প্রতিষ্ঠান মনে করি। প্রতিষ্ঠানকে আপন করে নিতে পারলে আমরা অবশ্যই সৎ থাকবো এবং সৎভাবে দায়িত্ব পালন করবো। কাজ করার স্পৃহাও সততার অংশ। কোনটা সঠিক, কোনটা ভুল—সেটা এখন আমরা অকুতোভয়ে বলতে পারছি। আমাদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহনশীলতা থাকতে হবে। প্রান্তিক মানুষের মাঝে অপতথ্য বা মিথ্যা তথ্যের বিস্তার রোধে বেতারের বিশেষ ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে।
মতবিনিময়কালে বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক এ এস এম জাহীদ, প্রধান প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মুনীর আহমদ, আধুনিক তথ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মুন্সি জালাল উদ্দিন, বেতারের পরিচালক মোঃ বশির উদ্দিন, খুলনা বেতারের আঞ্চলিক বার্তা নিয়ন্ত্রক মোঃ নূরুল ইসলাম, আঞ্চলিক পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোঃ শামিম হোসেন, আঞ্চলিক বেতার প্রকৌশলী মোঃ মোতাকাব্বির করীম খান, বাংলাদেশ বেতারের অতিরিক্ত পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) সৈয়দ জাহিদুল ইসলাম, জেলা তথ্য অফিসের পরিচালক গাজী জাকির হোসেন, আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপপ্রধান তথ্য অফিসার এ এস এম কবীরসহ খুলনা বেতারের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে সচিব মাহবুবা ফারজানা খুলনা সার্কিট হাউজে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীন খুলনার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এ সময় তথ্য সচিব বলেন, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠানমান কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। এক সময় সরকারি গণমাধ্যম—বিটিভি ও বেতারে—কালজয়ী নাটকসহ অনেক জনপ্রিয় অনুষ্ঠান প্রচারিত হতো। দর্শক-শ্রোতাদের কাছে বিটিভি ও বেতারের সেই আবেদন ফিরিয়ে আনতে হবে। বাংলাদেশ বেতারকে জনমুখী করে তুলতে হবে, সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হবে। একই সঙ্গে কেবল সরকারের দেওয়া অর্থের ওপর নির্ভর না করে শ্রোতানন্দিত অনুষ্ঠান নির্মাণের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন ও স্পন্সরশিপ থেকে নিজস্ব আয়ের পরিমাণ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাষ্ট্রের বোঝা না বানিয়ে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করাটা এখন সময়ের দাবি। পাশাপাশি এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের জন্য আইসিটিসহ প্রয়োজনীয় ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি করাও আবশ্যক।
মতবিনিময়কালে বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক এ এস এম জাহীদ, আধুনিক তথ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মুন্সি জালাল উদ্দিন, খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিতান কুমার মণ্ডল, জেলা তথ্য অফিসের পরিচালক গাজী জাকির হোসেন, আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপপ্রধান তথ্য অফিসার এ এস এম কবীর, খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিসের সিনিয়র তথ্য অফিসার মোঃ মেহেদী হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা সফরকালে তথ্য ও সম্প্রচার সচিব খুলনায় আধুনিক তথ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পের স্থান ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের খুলনা উপকেন্দ্র পরিদর্শন করেন।