খুলনার দাকোপ উপজেলার পানখালী ইউনিয়নের মৌখালী গ্রামে ঝবঝবিয়া নদীর ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে আশপাশের ছয়টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ তীব্র আতঙ্কে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) আওতাধীন ৩১ নম্বর পোল্ডারের মৌখালীর গাজী বাড়ির সামনে প্রায় ২০০ মিটার embankment-এ (বাঁধে) গত দুই দিনে গভীর ফাটল দেখা দেয় এবং এর এক-তৃতীয়াংশ অংশ ইতিমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এ অবস্থায় মৌখালী, পানখালী, লক্ষ্মিখোলা, খাতাইল, কাটাবুনিয়া ও হোগলাবুনিয়া গ্রামের দুই হাজারেরও বেশি পরিবার বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে।
এদিকে ভদ্রা, অন্ধার মানিক, পশুর, ঢাকি ও শিবসা নদীর পানি তিন থেকে চার ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙন আরও তীব্র হয়েছে। ফলে পানখালী ও তিলডাঙ্গা ইউনিয়ন এবং চালনা পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় নতুন করে ফাটল দেখা দিচ্ছে।
স্থানীয়দের আশঙ্কা, দ্রুত সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা না নিলে পুরো বাঁধ ধসে গিয়ে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী तैयেবুর রহমান বলেন, “কয়েক দিন আগে গাজী বাড়ির সামনে প্রথম ফাটল দেখা দেয়। আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানাই, তারা পাউবোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু এর মধ্যেই বাঁধের বড় অংশ নদীতে ভেঙে পড়েছে। এখন শত শত পরিবার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।”
পানখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ সাব্বির আহমেদ বলেন, “ঝবঝবিয়া নদীর প্রবল স্রোতের কারণে বাঁধটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আমি ইতোমধ্যে পাউবোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং দ্রুত সুরক্ষামূলক কাজ শুরু করার আশ্বাস দিয়েছেন।”
খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২-এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মধুসূদন পাল বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি আমরা পরিদর্শন করেছি। জরুরি সুরক্ষা কার্যক্রম শুরু করার জন্য জরিপ চলছে এবং দীর্ঘমেয়াদি তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”
পাউবো-২ খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, “প্রায় ৭০ মিটার এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে মূল বাঁধ থেকে নদীর দূরত্ব এখনো প্রায় ১৫ মিটার। তাৎক্ষণিক ভয়াবহ ঝুঁকি না থাকলেও বিস্তারিত জরিপ শেষে প্রয়োজনীয় সুরক্ষামূলক কাজ শুরু করা হবে।”


