
রোজা অবস্থায় থুথু গিলে ফেলা নিয়ে অনেকের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়। থুথুর পরিমাণ বেশি হলে রোজা ভেঙে যাবে কি না— এ চিন্তাও তাড়া করে অনেককে। কিন্তু স্বস্তির বিষয় ও বিশুদ্ধ মাসআলা হচ্ছে, থুথু গিলে ফেললে রোজা ভেঙে যায় না। এমনকি থুথুর পরিমাণ বেশি হলেও। তবে, অন্য কারো থুথু গিলে ফেললে কিংবা নিজেরই থুথু মুখ থেকে বের করার পর গিলে ফেললে রোজা ভেঙে যাবে। (আমলগীরী, ১ম খণ্ড, ২০৩ পৃষ্ঠা)
কফের ক্ষেত্রে একই বিধান প্রযোজ্য। যতক্ষণ পর্যন্ত থুথু কিংবা কফ মুখের ভেতর বিদ্যমান থাকে, গিলে ফেললে রোজা ভঙ্গ হয় না। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে কফ গিলে ফেলা রোজাদার-বেরোজাদার কারো জন্যই জায়েজ নয়। কেননা কফ ঘৃণিত জিনিস। হতে পারে কফের মধ্যে এমন কিছু রোগ রয়েছে— যা শরীর থেকে নিঃসরিত হয়েছিল।
কিন্তু এরপরও কফ গিলে ফেললে রোজা ভাঙবে না। কেননা কফ পানাহার হিসেবে গণ্য হয় না। (আল-শারহুল মুমতি; শাইখ উছাইমিন: ৬/৪২৮)
কফ মুখের সাধারণ থুথুর অন্তর্গত। মুখের মধ্যে সাধারণ পানি যাকে থুথু বলা হয় তা দ্বারা রোজা নষ্ট হয় না। সুতরাং কফ গিলে ফেলার কারণেও রোজা ভেঙে যাবে না। (ফতোয়ায়ে রিয়াজুল উলুম: ৩/৩০৩; আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল: ৩/৪০৩)
এমনকি যদি কেউ থুথু মুখের মধ্যে একত্রিত করে গিলে ফেলে তাতেও রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। তবে এ বিষয়ে অনেকেই বলেছেন, বেশি পরিমাণে থুথু বা কফ জমিয়ে গিলে ফেললে রোজা মাকরুহ হবে।
প্রখ্যাত ফকিহ ইবরাহিম নাখয়ি (রহ.)-কে কফ গিলে ফেলা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো। তখন তিনি বললেন, ‘মুখভরে না হলে, সর্বসম্মতিক্রমে রোজা ভাঙবে না। আর যদি মুখভরে হয়, তাহলে ইমাম আবু ইউসুফ (রহ.) এর মতে রোজা ভেঙে যাবে। আর ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর মতে ভাঙবে না। আর এটাই গ্রহণযোগ্য মতামত। (মারাকিল ফালাহ মাআত-তাহতাভি: ৩৪২)