মধ্যাহ্ন বিরতির আগে কামিন্দু মেন্ডিস যেভাবে শ্রীলঙ্কাকে টানছিলেন, নিশ্চিতভাবেই তারা বাংলাদেশের বিপক্ষে লিড নেওয়ার পথে ছিল। ওই মুহূর্তে তাদের সংগ্রহ ছিল ৬ উইকেটে ৪৬৫ রান। এরপর মাঠে নেমেই খেই হারায় লঙ্কানরা। ৭.২ ওভারে ২০ রান তুলতেই তারা বাকি ৪ উইকেট হারিয়ে অলআউট হয়েছে। যার প্রায় পুরো কৃতিত্ব স্পিনার নাঈম হাসানের। ডানহাতি এই স্পিনার আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্যারিয়ারে চতুর্থ ফাইফার তুলে নিয়েছেন।
স্বাগতিকদের প্রথম ইনিংস ৪৮৫ রানে থামায় ১০ রানের লিড পেয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে নাজমুল হোসেন শান্ত’র দল জোড়া সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে ৪৯৫ রান করে। কামিন্দু আউট হয়েছেন সেঞ্চুরি মিসের হতাশা নিয়ে। নাঈমের টার্ন ও বাউন্সে ধোঁকা খেয়েছেন তিনি। ফলে ৮৭ রানে থাকাবস্থায় তার ব্যাট ছুঁয়ে বল লিটন দাসের গ্লাভসে জমা পড়ে।
টেস্টে ২৫ বছর বয়সী স্পিনার নাঈমের সেরা বোলিং ফিগার ১০৫/৬। ২০২২ সালের সেই চট্টগ্রাম টেস্টেও প্রতিপক্ষ ছিল শ্রীলঙ্কা। এ ছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাওয়া ফাইফার দুটি ছিল দেশের মাটিতে। অর্থাৎ, এবারই প্রথম বিদেশের মাটিতে লাল বলে ৫ উইকেট নিলেন নাঈম। অবশ্য দেশের বাইরে তার সেভাবে একাদশে সুযোগও মেলে কম। গতকাল কেবল দীনেশ চান্দিমালকে আউট করা এই স্পিনার আজ একে একে ফেরান কামিন্দু, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, থারিন্দু রত্ননায়েকে ও আসিথা ফার্নান্দোকে।
এর আগে জোড়া সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে ৪৯৫ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। এরপর শ্রীলঙ্কা তৃতীয় দিন রান তুলেছে প্রায় ৪ গড়ে। সফরকারী বোলারদের হতাশ করে দিন শেষে তাদের স্কোরবোর্ড ছিল– ৩৬৮/৪। এরপর চতুর্থ দিনে খেলতে নেমে মাত্র ১৮ রানের ব্যবধানেই ২ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। দুই ব্যাটারই আউট হয়েছেন স্ব-প্রণোদিত হয়ে। ধনাঞ্জয়া নাঈম হাসানের ডেলিভারি লেগ স্টাম্পের প্রায় বাইরে দিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট লাগিয়ে ১৯ রানে ফেরেন। ফলে তার সঙ্গে ৪৬ রানের জুটি ভাঙে কামিন্দুর।
অভিজ্ঞ ব্যাটার কুশল মেন্ডিসও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৫ রান করেই তিনি হাসান মাহমুদের বলে একই স্টাইলের বল খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন লিটনের হাতে। এর ভেতর ব্যক্তিগত টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটি তুলে নেন কামিন্দু। আর শ্রীলঙ্কা ৬ উইকেটে ৪৬৫ রান তুলে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায়। তার সঙ্গে মিলান রত্ননায়েকের ৮৪ রানের জুটি ভেঙেছে বিরতি থেকে নামার পরই। মিলান ৩৮ রানে থাকাবস্থায় পুল করতে গিয়ে বোল্ড হন হাসানের বলে। এরপর নাঈমের একই ওভারে আউট হন কামিন্দু ও থারিন্দু। ১৪৮ বলে ৮ চার ও ১ ছক্কায় কামিন্দু ৮৭ রান করেন। বাকি ১৫ রানের মাথায় অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা।
নাঈমের ফাইফার ছাড়াও হাসান মাহমুদ ৩টি এবং তাইজুল ইসলাম ও মুমিনুল হক একটি করে শিকার ধরেন।