দুই দেশের (ভারত ও বাংলাদেশ) বাসিন্দা মা-মেয়ে। দেখা হয় না বহু বছর। শেষ দেখা হলো মায়ের মৃত্যুর পর। শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) বিজিবি-বিএসএফের সমন্বয়ে সীমান্তের মেইন পিলার ৯৩ এর কাছে শূন্য লাইনে দেখার ব্যবস্থা করা হয়।
মা বাবা বাস করতেন ভারতের নদিয়া জেলার চাপড়া থানাধীন হাটখোলা গ্রামে। আর তাদের দুই মেয়ে ডালিমুন ও রাবেয়া খাতুন স্বামী-সন্তান নিয়ে বসবাস করেন চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে।
মা ফজিলা খাতুন (৭০) শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) সকালে নিজ বাড়িতে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেছেন। যদিও তার স্বামী অনেক আগেই মারা গেছেন।
মানুষের মাধ্যমে বাংলাদেশে বসবাসকারী দুই মেয়ে মায়ের মৃত্যুর খবর জেনেছেন। মায়ের সঙ্গে অনেক বছর দেখা না হওয়ায় মৃতদেহ শেষবারের মতো দেখার অনুরোধ করেন চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন ৬-বিজিবিকে।
বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয় ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে (বিএসএফ)। শুক্রবার বিকেলে বিজিবি-বিএসএফের সমন্বয়ে সীমান্তের মেইন পিলার ৯৩ এর কাছে শূন্য লাইনে সৌহার্দ্য ও শান্তিপূর্ণভাবে মৃতদেহের শেষ দেখার ব্যবস্থা করানো হয়।
মানবিক বিষয় বিবেচনা করে উভয় দেশের সৈনিকদের মতামতের ভিত্তিতে ঐদিন বিকাল ৩টা ৪০মিনিট থেকে ৪টা ১০মিনিট সময় নির্ধারণ করেন। ঐ সময়ের মধ্যে মেয়ে ডালিমন খাতুন (৫২) ও রাবেয়া খাতুন (৪৬) ভারতীয় অংশে প্রবেশ করে মাকে শেষ বারের মতো দেখে চলে আসেন।
চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহ মো. ইশতিয়াক স্বাক্ষরিত ইমেইলে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতীয় ভূখণ্ডে মারা যাওয়া মাকে দেখতে বাংলাদেশে বসবাস করা সন্তানদের শেষ দেখার অনুরোধ করেন।
এরই প্রেক্ষিতে বিজিবি-বিএসএফের সমন্বয়ে মানবতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে মৃতের নিকট আত্মীয় স্বজনদের উপস্থিতিতে সৌহার্দ্য ও শান্তিপূর্ণভাবে লাশ দেখানোর শেষ দর্শন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। মৃতের দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বর্তমানে তারা বিবাহিত এবং স্বামী সন্তান নিয়ে বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সীমান্তে শান্তি, সস্প্রীতি এবং উভয়ই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সু-সম্পর্ক উন্নয়নের অগ্রযাত্রার অংশ হিসেবে বিজিবি-বিএসএফের মানবতামূলক কার্যক্রম উভয়ই দেশের সীমান্তে বসবাসরত সীমান্তবর্তী জনগণের মধ্যে সুম্পর্ক উন্নয়ন হবে এবং ভবিষ্যতে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। এছাড়াও উভয়ই সীমান্তে ভ্রাতৃত্ববোধ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে আন্তঃ রাষ্ট্রীয় সীমান্ত অপরাধ হ্রাস পাবে বলে আশা করা যায়।