যশোর জেনারেল হাসপাতালে পরিচয়হীন সেই নবজাতক মারা গেছে। মৃত্যুর পর মিলেছে নবজাতকের মা ও নানির খোঁজ। শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে প্রায় ২৪ ঘণ্টা অজ্ঞাতপরিচয় থাকার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শিশুটি।
জানা যায়, ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার পরাণপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম ও কাকলি বেগম দম্পতির পঞ্চম কন্যা সন্তান ওই নবজাতক।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে হাসপাতালের শিশু বিভাগে নবজাতকটিকে রেখে যান তার নানি। এরপর কারও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। কোনো স্বজনকে পাওয়া না যাওয়ায় দায়িত্বরত নার্সেরা শিশুটিকে চিকিৎসা দিচ্ছিলেন।
নবজাতকের নানি নাহার বেগম জানান, নবজাতকটি জন্মের পর পরই চিকিৎসকেরা শিশু ওয়ার্ডে রাখতে বলেন। সে অনুযায়ী শিশু ওয়ার্ডে রেখে আসেন। দুপুর ৩টার দিকে তিনি ওই ওয়ার্ডে যান এবং শিশুটিকে একটি কাপড় দিয়ে ঢেকে ফের চলে যান। পরে আরও কয়েকবার শিশু ওয়ার্ডে গেলেও দরজা বন্ধ থাকায় ঢুকতে পারেননি।
নাহার বেগম বলেন, আজ সকালে শিশু ওয়ার্ডে গেলে সবাই শিশুটিকে ফেলে যাওয়ার ঘটনা জানায়। আমরা শিশুটিকে ফেলে যাইনি। লোক না থাকায় ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। ওয়ার্ডে কাউকে না জানিয়ে রেখে গিয়েছিলাম।
তিনি আরও বলেন, মেয়েকে দেখার মতো কেউ ছিল না। তাই লেবার ওয়ার্ডে মেয়ের কাছে ছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বিকেলে শিশুটির মৃত্যু হয়।
হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান মাহবুবুর রহমান জানান, অপুষ্ট অবস্থায় জন্ম নিয়েছিল শিশুটি। সে কারণে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের নিওন্যাটাল ইউনিটেই তার মৃত্যু হয়েছে।
নবজাতকটির মৃত্যুর আগে মা কাকলি বেগম বলেন, এটা আমার পঞ্চম কন্যা সন্তান। বাচ্চা হওয়ার পরে আমি দীর্ঘ সময় অচেতন ছিলাম। বৃদ্ধ মা ছাড়া হাসপাতালে আমাকে দেখার কেউ নেই। এই ওয়ার্ডের নার্সরা যদি একটু সহযোগিতা করত তাহলে এমন কিছু হতো না। আমার নাড়ি ছেঁড়া ধনকে আমি কেন ফেলে যাব!