বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মোস্তফা মোহসীন মন্টু আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। গণফোরামের সভাপতি হিসেবেই তার পরিচয় নয়। তার মূল পরিচয় হচ্ছে, তিনি সত্যিকার অর্থেই একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। পুরো সত্তরের দশকজুড়ে তিনি স্বাধীনতার সংগ্রাম করেছেন। পরে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছেন। প্রত্যক্ষভাবে যুদ্ধ করেছেন।
রোববার (১৫ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।
এদিন বিকেল ৫টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও গণফোরাম সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টু। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।
হাসপাতালে গিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, নীতির সঙ্গে মিল না হওয়ার কারণে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। তারপর আর কোনো কম্প্রোমাইজ করেননি, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নীতির প্রশ্নে কোনো আপস করেননি।
তিনি বলেন, ‘মোস্তফা মোহসীন ছিলেন গণতন্ত্রে অটল বিশ্বাসী একজন মানুষ। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী একজন রাজনৈতিক নেতা। আমরা সত্যিকার অর্থেই একজন বিশিষ্ট দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক নেতাকে হারালাম। আমি ব্যক্তিগতভাবে হারিয়েছি— আমার একজন অত্যন্ত শরিককে, আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে। তার চলে যাওয়ায় জাতির যে ক্ষতি হয়েছে, তা সহজে পূরণ হওয়ার নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখনকার রাজনীতিতে এ ধরনের মানুষের খুব বেশি প্রয়োজন ছিল। তার চলে যাওয়া আমাদের সবার জন্য অত্যন্ত দুঃখের ও কষ্টের। তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। পরম করুণাময় আল্লাহর কাছে দোয়া চাইছি— আল্লাহ যাতে নসিব করেন এবং তার পরিবারের সদস্যদের এই শোক সহ্য করার তিনি শক্তি দান করেন। বর্তমানে যারা রাজনীতি করছেন, তাদের তাকে অনুসরণ করা উচিত।’
হাসপাতালে বিএনপির মহাসচিব মোস্তফা মোহসীন মন্টুর দুই মেয়ের সঙ্গে কথা বলেন এবং পরিবারের স্বজনদের সান্ত্বনা দেন। মন্টুর ছোট মেয়েকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘বাবাকে ধরে রাখতে পারলে না।’
মির্জা ফখরুল জানান, শহীদ মিনারে দলের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হবে। তিনি নিজেও থাকবেন সেখানে। হাসপাতালে মির্জা ফখরুল পৌনে ৭টায় আসেন। এরপর রাত পৌনে ৮টার দিকে মন্টুর মরদেহ তার বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়।
গণফোরাম সভাপতির মৃত্যুর খবরে হাসপাতালে ছুটে আসেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণফোরামের সিনিয়র নেতা সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।