রাজশাহীর গণসমাবেশের মধ্য দিয়ে ঢাকার বাইরে বিএনপির কর্মসূচি শেষ হচ্ছে আজ। বিভাগীয় পর্যায়ের শেষ কর্মসূচি ঘিরে বিএনপি নেতাকর্মীরা বেশ উজ্জীবিত। পদে পদে বাধা, পুলিশি তল্লাশি উপেক্ষা করে দুই থেকে চার দিন আগে রাজশাহীতে প্রবেশ করে দলটির নেতাকর্মীরা। তবে বিএনপির অন্য বিভাগের সমাবেশের মতো রাজশাহীর সমাবেশের আগে থেকেই মাঠে প্রবেশ করতে পারছেন না নেতাকর্মীরা। পাশেই ঈদগাহ মাঠে সামিয়ানা টানিয়ে অবস্থান নেন বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতাকর্মীরা। ফলে মাঠের অদূরেই যেন পরিণত হয় আরেক সমাবেশে।
রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠে আয়োজিত বিএনপির সমাবেশস্থল আজ শনিবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল থেকে প্রবেশের অনুমতি রয়েছে বলে জানান বিএনপি নেতারা। তবে মঞ্চ তৈরির কাজ শেষ হয় গতকাল বিকেলেই।
বিএনপি নেতারা বলেন, সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে যতটুকু প্রক্রিয়া রয়েছে সমস্ত কিছু করা হয়েছে। রাজশাহী থেকে পুরো বিভাগকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এত বাধা সত্ত্বেও নেতাকর্মীরা বিভিন্নভাবে নগরীতে প্রবেশ করেছে। এই সমাবেশ সকল রেকর্ড ভেঙে আশা করা হচ্ছে সবচেয়ে বড় জমায়েত হবে।
জানা গেছে, রাজশাহী-নাটোর মহাসড়কের পুঠিয়া, বেলপুকুর, কাটাখালি ও তালাইমারি, রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কের মোহনপুর, নওহাটা ও নওদাপাড়া এবং রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কের গোদাগাড়ী ও কাশিয়াডাঙ্গা মোড়ে পুলিশের বিশেষ চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) বিএনপির চেয়ারপাসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বলেন, পুলিশি বাধা এবং হয়রানি উপেক্ষা করে এরই মধ্যে লাখো নেতাকর্মী রাজশাহী শহরে প্রবেশ করেছে। এরমধ্যে অনেকেই রাজশাহী ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠের পাশে ঈদগাহ মাঠে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। বাধা দিয়ে হয়রানি করে বিএনপি নেতাকর্মীদের সমাগম ঠেকানো যাবে না।
তিনি বলেন, ঈদগাহ মাঠে নেতাকর্মীদের থাকার জন্য তাঁবু টানানোর ব্যবস্থা করা হলেও পুলিশ প্রথম দিকে তাতেও বাধা দেয়। ফলে অনেক নেতাকর্মীকে রাতে খোলা আকাশের নিচে কাটাতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈসা বলেন, বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতাকর্মীদের পুলিশ মাঠে ঢুকতে দেয়নি। শুধু মঞ্চ তৈরির জন্য কিছু লোককে প্রবেশ করতে দিয়েছে। তাই বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতাকর্মীরা ঈদগাহ মাঠে অবস্থান নেয়।
মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রফিকুল আলম বলেন, নগরীর প্রবেশদারগুলোতে নিয়মিত চেকপোস্ট। বিএনপির সমাবেশ ঘিরে যেকোনো অপ্রিতিকর ঘটনা এড়াতে নজরদারী ও তল্লাশি বাড়ানো হয়েছে। তবে হয়রানি ও অনেককে ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়।
শনিবার রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখবেন।
জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, দলীয় কর্মসূচিতে গুলি করে নেতাকর্মীদের হত্যার প্রতিবাদ এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপক্ষে সরকারের দাবিতে বিভাগীয় (দলের সাংগঠনিক বিভাগ) পর্যায়ে সমাবেশ করছে বিএনপি। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল, ফরিদপুর, সিলেট ও কুমিল্লায় বিভাগীয় সমাবেশ সম্পন্ন করেছে দলটি।
এরই অংশ হিসেবে ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে গণসমাবেশ করছে দলটি। সবশেষ ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।