ইউক্রেনের উপর হামলার জের ধরে রাশিয়ার উপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তার ফলে রুশ অর্থনীতি ধাক্কা খেলেও ইউরোপ থেকে মস্কোর মূল আয়ের পথ বন্ধ হয়নি। পেট্রোলিয়াম ও গ্যাস বিক্রি করে প্রতিদিন কোটি কোটি ইউরো পাচ্ছে ক্রেমলিন। ইউক্রেন বার বার রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানির উপর ঢালাও নিষেধাজ্ঞার ডাক দিলেও সেই প্রশ্নে ইউরোপে ঐকমত্য অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না।
এখনই পুরোপুরি সম্ভব না হলেও ধাপে ধাপে রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি বন্ধ করতে চায় ইইউ৷ সম্ভবত ‘স্মার্ট’ নিষেধাজ্ঞার আওতায় সেই প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে৷ ষষ্ঠ দফার নিষেধাজ্ঞার প্রস্তুতি চলছে।
ইইউর পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেপ বরেল জার্মানির ‘ডি ভেল্ট’ সংবাদপত্রকে বলেন, এই মুহূর্তে রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানির প্রশ্নে ইইউ ঐক্যবদ্ধভাবে কোনো অবস্থানে নেই। আগামী মাসের শেষে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। তার আগে সে বিষয়ে সিদ্ধান্তের সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ তেল ও গ্যাস আমদানির ক্ষেত্রে রাশিয়ার উপর নির্ভরতা কমানোর জোরালো উদ্যোগ নিচ্ছে। বরেল মনে করেন, কোনো এক সময়ে সেটা সম্ভব হবে। তার মতে, তখন রাশিয়া এমন মোটা অংকের রাজস্ব হারানোর কষ্ট টের পাবে।
ইইউ রাশিয়ার উপর ষষ্ঠ দফায় আরও একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা চাপানোর যে প্রস্তুতি চালাচ্ছে, তার মধ্যে জ্বালানি অন্তর্গত হবার সম্ভাবনা নেই। ‘ডি ভেল্ট’ সংবাদপত্রের সূত্র অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহে সেই প্রস্তাবের খসড়া প্রস্তুত হবার কথা। ইউরোপের সবচেয়ে বড় তেল সরবরাহকারী দেশ হিসেবে রাশিয়ার অবস্থান অটুট থাকবে।
২০২০ সালের হিসেব অনুযায়ী রাশিয়া ইউরোপকে এক-চতুর্থাংশেরও বেশি পেট্রোলিয়াম সরবরাহ করেছে। গত বছর পেট্রোলিয়াম ও পেট্রোপণ্য রপ্তানির কারণে রাশিয়ার এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি রাজস্ব এসেছে। বর্তমানে শুধু ইউরোপ থেকেই রাশিয়ার দৈনিক প্রায় ৪৫ কোটি ডলার আয় হয়। সেইসঙ্গে ইউরোপে গ্যাস বিক্রি করে প্রায় ৪০ কোটি ও কয়লা বিক্রি করে আড়াই কোটি রাজস্ব আসে।
ব্রিটেনের ‘টাইমস’ সংবাদপত্র অবশ্য দাবি করছে, যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়া থেকে পেট্রোলিয়াম আমদানির উপর ‘স্মার্ট’ নিষেধাজ্ঞা চাপানোর উদ্যোগ নিচ্ছে। ইইউ কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ভালদিস ডমব্রোভস্কিসকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ষষ্ঠ দফার নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই সেই পদক্ষেপ থাকতে পারে। তবে এখনো এই প্রস্তাবের খুঁটিনাটী বিষয়গুলি চূড়ান্ত হয়নি। ধাপে ধাপে রাশিয়া থেকে পেট্রোলিয়াম আমদানি কমিয়ে আনতে নির্দিষ্ট মূল্যের বেশি অংকের উপর শুল্ক চাপানো হতে পারে বলে তিনি মনে করছেন।
সূত্র: ডয়চে ভেলে
পি এস/এন আই