ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের জেরে নতুন অস্ত্রের চাহিদা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের শরণাপন্ন হচ্ছে ইউরোপীয় সরকারগুলো। ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ নতুন নতুন চাহিদার তালিকা নিয়ে মার্কিন সরকার ও ঠিকাদারদের কাছে দৌঁড়াচ্ছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সরকার।
জার্মানি ইতোমধ্যেই মার্কিন কোম্পানি লকহিড মার্টিন কর্পের ৩৫টি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছেছে। এবার তারা ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত ব্যবস্থার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে খোঁজখবর নিচ্ছে বলে জানিয়েছে এই বিষয়ে অবগত সূত্র।
এছাড়া পোল্যান্ড জরুরি ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে স্পর্শকাতর রিপার ড্রোন সিস্টেম কিনতে চায় বলে এই সপ্তাহে জানিয়েছেন পোলিশ সরকারের এক কর্মকর্তা।
পূর্ব ইউরোপের অন্য দেশগুলোর কাছ থেকেও চাহিদা পাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এসব অঞ্চলের মার্কিন মিত্ররা সেইসব অস্ত্র কিনতে চায় যেগুলো ইউক্রেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে সফলতার সঙ্গে ব্যবহার করছে। এই বিষয়ে অবগত দুইটি সূত্র জানিয়েছে, বিমান-বিধ্বংসী স্টিনগার ক্ষেপণাস্ত্র এবং ট্যাংক বিধ্বংসী জ্যাভেলিন ক্ষেপণাস্ত্রসহ বিভিন্ন অস্ত্রের চাহিদা পাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
ক্রমবর্ধমান অনিশ্চিত নিরাপত্তা দৃষ্টিভঙ্গি মেটাতে ইউরোপ প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াতে তৎপর হয়েছে। জার্মানি, সুইডেন, ডেনমার্কসহ কয়েকটি দেশ প্রতিরক্ষা ব্যয় ব্যাপকভাবে বাড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের কর্মকর্তা মারা কারলিন জানান, ইউরোপিয়ান মিত্ররা তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় ‘দ্বিগুণ বাড়াচ্ছে’। গত সপ্তাহে এক কংগ্রেসশনাল শুনানিতে তিনি বলেন, রুশ আগ্রাসনে ইউরোপের আঞ্চলিক অখণ্ডতা হুমকির মুখে পড়েছে।
বিদেশি সরকারের কাছে অস্ত্র বিক্রি করতে মার্কিন ঠিকাদারদের যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের অনুমোদনের প্রয়োজন পড়ে। সেই কারণে পেন্টাগনের প্রতিরক্ষা নিরাপত্তা সহযোগিতা প্রশাসন প্রতি সপ্তাহে ইউরোপীয় সংকট ব্যবস্থা দলের সঙ্গে বৈঠক করছে। এসব বৈঠকে ইউক্রেনের বর্তমান পরিস্থিতি সংশ্লিষ্ট সুনির্দিষ্ট অস্ত্রের চাহিদাগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।
আমেরিকান প্রতিরক্ষা ঠিকাদারদের উৎপাদিত অস্ত্র বিক্রি এবং হস্তান্তর ত্বরাণ্বিত করতে মার্কিন সরকারের অনুমোদন দ্রুত চূড়ান্ত করতে পেন্টাগন ফের একটি টিম গঠন করেছে। তারা ক্রমবর্ধমান চাহিদা সামাল দেওয়ার কাজ করছে।
পেন্টাগনের এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, সময়মতো অস্ত্র সরবরাহ নিশ্চিত করতে পেন্টাগন ঠিকাদারদের সঙ্গে কাজ করছে।
রায়থিয়ন টেকনোলোজিস এবং লকহিড মার্টিন কর্প যৌথভাবে জ্যাভেলিন উৎপাদন করে আর রায়থিয়ন উৎপাদন করে স্টিনগার। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ আগ্রাসন শুরুর পর সবধরনের অস্ত্র বিক্রি বাড়ার সম্ভাবনা থেকে লকহিডের শেয়ারের দর বেড়েছে ৮.৩ শতাংশ এবং রায়থিয়নের ৩.৯ শতাংশ।
রায়থিয়নের নির্বাহী টম লিবার্টি জানিয়েছেন তাদের কোম্পানি জ্যাভেলিন এবং স্টিনগার অস্ত্রের যোগান স্থিতিশীল রাখার জরুরি প্রয়োজনীয়তা মেনে নিয়েছে।
পিএসএন/এমঅাই