শহীদ ডাঃ শামসুল আলম খান মিলন দিবস আজ। যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হবে দিনটি। এটি তাঁর শাহাদাতের ৩৫তম বার্ষিকী।
১৯৯০ সালের এই দিনে স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলনের উত্তাল সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় তৎকালীন সরকারের সমর্থিত সন্ত্রাসীদের গুলিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ডিএমসি)-এর শিক্ষক ডাঃ শামসুল আলম খান মিলন নিহত হন। তিনি তখন বাংলাদেশ মেডিকেল এ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
ডাঃ মিলনের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন এক গণবিক্ষোভে রূপ নেয়, যা শেষ পর্যন্ত স্বৈরশাসকের পতন ও দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করে।
দিবসটি উপলক্ষে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক বাণীতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে ডাঃ মিলনের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, শহীদ ডাঃ শামসুল আলম খান মিলন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের এক সাহসী সৈনিক ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে সাহসী শহীদ ডাঃ মিলনের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করেছিল। তার আত্মোৎসর্গের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ নয় বছরের এরশাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায়।’
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘স্বৈরতন্ত্রকে উৎখাত করে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠাই ছিল ডাঃ মিলনের অটল অঙ্গীকার। নিজের রক্তের বিনিময়ে তিনি দেশে গণতন্ত্রের জয় নিশ্চিত করেন। তাঁর এই পথ অনুসরণ করেই স্বৈরশাসনের পতন ঘটে এবং দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। জাতীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশে গণতন্ত্রের নতুন যাত্রা শুরু হয়েছিল।’
ডাঃ মিলনসহ সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, দিবসটি উপলক্ষে আমি ’৯০-এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের এক নির্ভিক সৈনিক শহীদ ডাঃ শামসুল আলম মিলনের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।’
এদিকে শহীদ ডাঃ মিলন দিবস উপলক্ষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমে পাঠানো বাণীতে বলেন, ’৮০’র দশকে স্বৈরাচারবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদ ডাঃ শামসুল আলম খান মিলন একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অবিস্মরণীয় নাম।’
তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে ডাঃ মিলনের আত্মদান স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন চলাকালে ১৯৯০ সালের ২৭ নভেম্বর তৎকালীন সরকারের লেলিয়ে দেওয়া পেটোয়া বাহিনীর গুলিতে তিনি শহীদ হন। তার শাহাদাৎবার্ষিকীতে আমি তার রুহের মাগফিরাত কামনা করি।’মির্জা ফখরুল বলেন, ‘৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে দেশের মানুষ স্বৈরাচারমুক্ত হলেও ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো ঘাপটি মেরে বসে আছে, তারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। কিন্তু দেশের জনগণ এখন ঐক্যবদ্ধ, তাই ষড়যন্ত্রকারীরা কখনোই সফলকাম হতে পারবে না।’
‘শহীদ ডাঃ মিলনের আত্মত্যাগ সবসময় আমাদের অনুপ্রাণিত করবে। গণতন্ত্রকে মজবুত ভীতের ওপর দাঁড় করাতে পারলেই ডাঃ মিলনের আত্মত্যাগ সার্থক হবে।’
প্রতিবছরের মতো এবারও বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করবে।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে ডাঃ মিলনের কবর জিয়ারত, ফাতেহা পাঠ এবং বিশেষ দোয়া।

