
আশি থেকে দুই হাজার পরবর্তী সময়কার মিলেনিয়াল ফ্যাশন আমাদের শিখিয়েছে কীভাবে নিজের স্টাইল স্টেটমেন্ট তৈরি করতে হয়। শুধু ব্র্যান্ডের সুন্দর কিছু পোশাক গায়ে জড়ালেই ফ্যাশন সচেতন হওয়া যায় না। পরিপাটি পৌরুষের জন্য প্রয়োজন নিজের ব্যক্তিত্ব আর অভিব্যক্তির সঠিক প্রকাশ এবং পোশাকের বিন্যাস।
ফ্যাশন সব যেন শুধু মেয়েদের জন্যই। সেই সময়টায় অনেকেই মনে করতেন ছেলেদের আবার ফ্যাশন কী! পরিবার প্রধান পুরুষ থাকবে এসব সাজানো-গোছানো শিল্পরূপের সুন্দর ছোঁয়া থেকে দূরে। ছেলেরা যাই পরুক না কেন, তাতে কিবা এসে যায়?
ফরমাল ড্রেস আপ
আধুনিকতার সঙ্গে ফ্যাশনের সরাসরি সম্পর্ক। তাই ফ্যাশন পরিবর্তনের প্রভাব পড়ে পোশাকেও। আর সে কারণেই দশক বা শতাব্দীর বিভাজনে পোশাকে এসেছে বৈচিত্র্য। মূলত নিজেকে পরিপাটি রাখার জন্য পছন্দসই ও সমকালীন ট্রেন্ডনির্ভর পোশাক চাই। বলা যায়, এসব ফরমাল ড্রেসআপ-অফিশিয়াল পোশাক হলেও এটি এখন দৈনন্দিন পোশাকের রূপ নিয়েছে।
দিনে বা রাতে যখনই হোক, আউটফিটের পরিবর্তন দরকার সময় অনুযায়ী। শীতে পরার জন্য স্যুট-ব্লেজার, ফরমাল শার্ট, যে কোনো ফরমাল প্যান্টের বা টুইল চিনোস সঙ্গে টাক ইন করে পরলে সবার মাঝে স্ট্যান্ড আউট করাটা সহজ হবে। একই সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্যও নিশ্চিত হয়ে যায়। অনুষঙ্গ হিসাবে অবশ্যই ভালো ব্র্যান্ডের ঘড়ি ও বেল্ট থাকা চাই।
শার্ট চাই ট্রেন্ডি ও সঠিক মাপের
প্রতি বছরই নতুন ট্রেন্ড যুক্ত হচ্ছে ফ্যাশন স্টেটমেন্টে। যার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য ওয়্যারড্রোবেও আনতে হয় নানা পরিবর্তন। এক্ষেত্রে মৌসুম যা-ই হোক না কেন দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় পুরুষের জন্য সব সময়ই ফ্যাশনে ইন ফুল স্লিভ বা হাফ স্লিভ শার্ট। আদতে পরিচিত শার্টগুলোই রং, নকশা আর কাটের পরিবর্তনে পাচ্ছে নতুন নতুন চেহারা। গতানুগতিক সূক্ষ্ম কিছু পরিবর্তনেই একই চেহারার শার্টের ক্যানভাস পাচ্ছে আধুনিকতার ছোঁয়া। তাই বলা যায়, লাইফস্টাইলে ট্রেন্ডি থাকতে নতুন ডিজাইন বা কাটের শার্ট ছাড়া যেন আপনার ওয়ারড্রোব অচল।
বটমে প্যাটার্ন বৈচিত্র্য
ফেব্রিক বৈচিত্র্য থেকে প্যাটার্ন বা ডিজাইন এখন সবকিছুতে কনটেম্পরারি টুইস্ট দিতে উৎসাহী ফ্যাশন ট্রেন্ডের প্রতিনিধিরা। ছেলেদের ফ্যাশনে ট্রাউজারসে তাই নিরীক্ষা এখন প্যাটার্ন, প্রিন্ট আর কাপড়ের ম্যাটেরিয়ালে। তবে আমাদের দেশে ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো চিনোস বা ফরমাল নিয়ে নিরীক্ষাধর্মী কাজ করছে যা মূলত প্যাটার্ননির্ভর। তবে ট্রাউজার হালকা না গাঢ় রঙের হবে তা নির্ভর করবে সামগ্রিক আউটফিট এবং পরিবেশের ওপর।
অভিজাত পকেট স্কয়ার
কোট বা স্যুটের পকেটে বিভিন্ন স্টাইলে বিভিন্ন আকার ও বিভিন্ন ভাঁজে রাখা যে রুমালসদৃশ কাপড় চোখে পড়ে, তাই পকেট স্কয়ার। পকেট স্কয়ার সব সময়ই টাই হতে ভিন্ন হওয়া চাই। বিভিন্ন উজ্জ্বল এবং গাঢ় রঙের মিশেলে সুন্দর নকশা কাটা ডিজাইনের পকেট স্কয়ার এখন ফ্যাশনে ইন।
ক্যাটস আইয়ের পরিচালক ও ডিজাইনার সাদিক কুদ্দুস বলেন, সারা বছর কেউ কেউ স্যুট পরেন বা কেউবা পরেন সামার জ্যাকেট বা ব্লেজার। কিন্তু শীতের পোশাক হিসাবে স্যুট অনেকের পছন্দ। তাদের কথা মাথায় রেখে স্যুটের ফেব্রিকস, কাটিং প্যাটার্ন, স্টিচ, বোতাম আর রঙে পরিবর্তন এসেছে। কাটিংয়ে ভিন্নতা আছে। গেলবারের মতো এবারও টু বাটন ব্লেজারই বেশি চলছে। ফরমাল ব্লেজারে কাপড়ের রঙের সঙ্গে মিল রেখে একই রঙের বাটন ব্যবহার করা হয়েছে। ক্যাজুয়াল ব্লেজারে কাপড়ের রঙের সঙ্গে মিলে এমন বাটন যেমন আছে, তেমনি ভিন্ন রঙের বাটন ব্যবহার করে কনট্রাস্ট করা ব্লেজারও নজরে পড়েছে। বৈচিত্র্যময় ব্যবহার দেখা গেছে হাতার নিচের অংশে। আমাদের দেশে শীত পড়ে কম। তবুও আরামদায়ক, স্টাইলিশ, অভিজাত পোশাক হিসাবে শীতে ব্লেজার বা কাপড়ের জ্যাকেট এখন বেশ জনপ্রিয়। এ কারণেই ফরমাল পোশাকের বলয় ভেঙে ক্যাজুয়াল ধাঁচেও ব্যবহার বেড়েছে ব্লেজারের।
পিসএন/এএপি