ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থক চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) কেন্দ্রীয় সম্মেলন আজ শুক্রবার (২৫ নভেম্বর)। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনকে ঘিরে চিকিৎসক নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। রয়েছে নতুন নেতৃত্ব আগমনের বার্তা।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
স্বাচিপ সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১৩ নভেম্বর স্বাচিপের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান সভাপতি ও অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন। বর্তমানে দেশে স্বাচিপের সদস্য সংখ্যা ১৫ হাজারেরও বেশি। সংগঠনটির প্রতি ৫ বছর পর পর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তবে করোনা মহামারী পরিস্থিতির কারণে সম্মেলন আয়োজন সম্ভব হয়নি।
সম্মেলন ঘিরে চিকিৎসকদের অনেকেই রাত-দিন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী ও এমপিদের সঙ্গে দেখা করে দোয়া নিচ্ছেন। সারাদেশে সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। শুরু হয়েছে আলোচনা, নতুন নেতৃত্বে আসছেন কারা?
সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সভাপতি ও মহাসচিব পদে কমপক্ষে এক ডজন নেতার নাম বিভিন্নভাবে আলোচনায় উঠে এসেছে। নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে এরইমধ্যে পদপ্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত সংগ্রহ করেছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। তবে যতই তদবির হউক না কেন দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ এবং ত্যাগী ও পরীক্ষীত নেতাদের মূল্যায়ন করা হবে বলে বলেও পদ প্রত্যাশী নেতাদের জানিয়ে আওয়ামী লীগ।
স্বাচিবের একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতা জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় আছে। ফলে অনেক সুযোগসন্ধানী কথিত স্বাচিপ নেতা তৈরি হয়েছে। কিন্তু দলের দুর্দিনে এদের অনেককেই দেখা যায়নি কিন্তু এখন তাদের অনেকেই বড় নেতা সাজছেন। আর এসব কারণে এবারও দলীয় প্রধানের কাছ থেকেই স্বাচিপের শীর্ষ নেতা অর্থাৎ সভাপতি ও মহাসচিবসহ গুরুত্বপূর্ণ পদের ঘোষণা আসতে পারে।
যারা আছেন আলোচনায়
বরাবরের মতো এবারেও সভপতি পদ আলোচনায় আছেন বর্তমান সভাপতি ডা. এম ইকবাল আর্সলান। এছাড়া সভাপতি পদে আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা ও বিএসএমএমইউয়ের সাবেক উপাচার্য প্রখ্যাত নিউরোসার্জন অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান, ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, অবসরপূর্ব ছুটিতে যাওয়া স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু ইউসুফ ফকিরের নাম শোনা যাচ্ছে।
আর সম্পাদক পদে আলোচনায় রয়েছেন, বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং স্বাচিবের কার্যকরি কমিটির সদস্য ডা. মো. তারিক মেহেদী পারভেজ, বিএসএমএমইউর সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. শাহরিয়ার নবী শাকিল ও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান মিলন, অধ্যাপক ডা. আবু জাফর চৌধুরী প্রমুখ।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সমর্থক চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ গঠিত হয় ১৯৯৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর । স্বাচিপের প্রতিষ্ঠাকালে অধ্যাপক এম এ কাদেরী সভাপতি ও ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। ২০১৫ সালের ১৩ নভেম্বর স্বাচিপের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হলেও ওইদিন কমিটি গঠনের দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীর ওপর ছেড়ে দিয়ে সম্মেলন স্থগিত করা হয়। সম্মেলনের পাঁচ দিন পর ১৮ নভেম্বর অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলানকে সভাপতি ও অধ্যাপক ডা. মো. আবদুল আজিজকে মহাসচিব নির্বাচিত করে কমিটি ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। বর্তমানে স্বাচিপের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রতি দুই বছরে একবার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার বিধান আছে। এছাড়া সভাপতি ও মহাসচিব সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে সরাসরি নির্বাচনের সুযোগ রয়েছে।